রক্তাক্ত: কায়রোর সেই গির্জায়। শুক্রবার। ছবি: এএফপি।
উৎসবের মরসুমে আনন্দে মাতোয়ারা সকলেই। তার সুযোগ নিয়ে বড়সড় জঙ্গি হামলার আশঙ্কাটা আগে থেকেই ছিল। তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও বন্দুকবাজের হামলায় রক্তাক্ত হল মিশরের একটি গির্জা।
আজ সকালে দক্ষিণ কায়রোর হেলওয়ান জেলার মার মিনা গির্জায় এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। তাতে নিহত হয়েছেন ৯ জন। নিহতদের তালিকায় রয়েছেন তিন পুলিশকর্মীও। হামলায় জখম হয়েছেন ৫ জন।
এঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ওই গির্জায় হামলা চালিয়েছে দুই সন্দেহভাজন জঙ্গি। এদের মধ্যে এক জন পুলিশের পাল্টা গুলিতে নিহত হয়েছে। আর অন্য জন পালিয়ে গিয়েছে বলে অনুমান। তার খোঁজে তল্লাশিও শুরু হয়েছে।
পুলিশের দাবি, ভিড়ে ঠাসা গির্জায় আত্মঘাতী হামলা চালানোর ছক কষেছিল ওই জঙ্গিরা। কারণ নিহত জঙ্গির কাছ থেকে বিস্ফোরক ঠাসা একটি বেল্ট উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু সেটিকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। ফলে বেশ বড়সড় হামলা ঠেকানো গিয়েছে।
কপটিক গির্জা ও নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা মিশরে নতুন ঘটনা নয়। তবে আজকের এই হামলার পিছনে কাদের হাত রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গিগোষ্ঠীই এর দায় স্বীকার করেনি। তবে এর আগে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীর মিশরীয়
শাখা খ্রিস্টানদের নিশানা করে গির্জাগুলিতে হামলা চালিয়েছে। পরবর্তী কালেও আরও বড়সড় হামলা চালানোরও হুমকি দিয়েছিল তারা। ফলে এ ক্ষেত্রেও আইএস যোগ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
বারবার কপটিক গির্জায় হামলা হলেও গত মাসেই সিনাইয়ের আল-রাওদহ মসজিদে বড়সড় জঙ্গি হামলার বলি হয়েছিল। তাতে নিহতের সংখ্যা ছিল তিনশো ছুঁইছুঁই।
এ বার বড়সড় হামলা চালাতে মূলত উৎসবের মরসুমটাকেই বেছে নিয়েছিল জঙ্গিরা। গির্জায় মোতায়েন করা হয়েছিল বহু পুলিশ। আজ সকালে প্রার্থনার জন্য গির্জায় জড়ো হয়েছিলেন বহু মানুষ। গির্জার বাইরে টহল দিচ্ছিল পুলিশ। সেই সময় গির্জার বাইরে দু’জনের আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়েছিল টহলরত পুলিশ বাহিনীর। ওই দুই সন্দেহভাজনের দিকে এগোতেই তারা আচমকা এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। পাল্টা জবাব দেয় পুলিশও। কিছুক্ষণ দু’পক্ষের গুলি বিনিময় চলার পরে অবশ্য এক সন্দেহভাজনকে গুলি করে মেরেছে পুলিশ।
তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই হামলার ঘটনার যে মোবাইল-ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বিস্ফোরক ঠাসা ভারী পোশাক পরে রাস্তায় হামাগুড়ি দিচ্ছে এক জন। ভিড় সরিয়ে তাকে হাতকড়া পরানো হচ্ছে।