এই গির্জাতেই হামলা চালায় বন্দুকবাজ। হামলাকারী রবার্ট বাওয়ার্স (ইনসেটে)। ছবি: রয়টার্স ও এএফপি।
আমেরিকার পিটসবার্গের এক গির্জায় বন্দুকবাজের হামলায় নিহত হয়েছেন ১১ জন। আহত বেশ কয়েক জন।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা নাগাদ ট্রি অব লাইফ নামে পিটসবার্গের ওই গির্জায় প্রার্থনায় ব্যস্ত ছিলেন ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ। সেই সময় রবার্ট বাওয়ার্স নামে বছর ছেচল্লিশের এক বন্দুকবাজ সেমিঅটোমেটিক রাইফেল এবং হ্যান্ডগান নিয়ে গির্জায় ঢুকে পড়েন। গির্জায় প্রার্থনারত মানুষদের উদ্দেশে অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিতে থাকেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করেন রবার্ট।
গুলির আওয়াজে চার দিকে তখন দৌড়োদোড়ি শুরু হয়ে যায়। তারই মাঝে বেশ কয়েক জন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলেই ১১ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন আরও কয়েক জন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে গোটা গির্জা ঘিরে ফেলে। রবার্টের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময় হয়। দু’পক্ষের সংঘর্ষে চার পুলিশকর্মী আহত হন। গুলিবিদ্ধ হন রবার্টও। আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গুলি করার আগে রবার্ট চিত্কার করে বলতে থাকেন, “এই মানুষগুলোর জন্যই আমাদের দেশের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। এঁদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই।” তার পরই সেমিঅটোমেটিক রাইফেল থেকে গুলি ছুড়তে শুরু করেন রবার্ট।
আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়া কাঁপাচ্ছে পাকিস্তানের মহিলা বাহিনীর নিজস্বী
এটিকে মার্কিন ইতিহাসে ইহুদিদের উপর জঘন্যতম হামলার ঘটনা বলা হচ্ছে ইতিমধ্যেই। এর আগে ইহুদিদের উপর এত বড় হামলা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, কয়েক দিন ধরেই একটি ওয়েবসাইটে ইহুদিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে পোস্ট করছিলেন রবার্ট। হামলার আগেও তিনি লেখেন, “আমাদের লোকজনকে হত্যা করা হচ্ছে, বসে থেকে এটা আমার পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। আমি আসছি।” তার পরই গির্জায় ঢুকে হামলা চালান রবার্ট। ট্রি অব লাইফ গির্জায় মূলত ইহুদিরা প্রার্থনা করতে আসেন। গির্জার সংলগ্ন এলাকাতেও ইহুদিদের আধিক্য বেশি। হামলাকারী সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন বলে মনে করছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে রবার্টের কোনও অপরাধের রেকর্ড নেই। কিন্তু এই হামলার পিছনে উদ্দেশ্য কী ছিল? প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা মনে করছেন এটা একটা হেট ক্রাইমের ঘটনা।
আরও পড়ুন: খাশোগির খুনির শাস্তি চান প্রেমিকা
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, “এটা খুব ভয়ানক ঘটনা। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “গির্জায় যদি সশস্ত্র রক্ষী থাকত তা হলে এই ঘটনা এড়ানো সম্ভব হত।”
(সারাবিশ্বের সেরা সব খবরবাংলায় পড়তে চোখ রাখতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে। )