চারদিকে পাহাড়। পাহাড়ি হ্রদের পাশে অপূর্ব এক নির্মাণ। যেন ফুরফুরে হাওয়ায় ঢেউ খেলে গিয়েছে তার গায়ে।
জায়গাটা নরওয়ের স্টরভিক। সম্পূর্ণ নির্জন একটা জায়গা। আশেপাশে কোনও জনবসতি নেই। এমন একটা জায়গায় শিল্পী এই অসাধারণ নির্মাণ কেন করেছেন? ছবি দেখে আন্দাজ করতে পারছেন এটা কী?
শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের জন্যই নয়, এই জায়গাটার আরও একটা গুরুত্ব রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ‘ইউরেড’ নামে একটা ডুবোজাহাজ এখানে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। অন্তত ৪২ জন নাবিকের মৃত্যু হয়েছিল সেই ঘটনায়।
কী মনে করছেন এই নির্মাণের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে? ডুবোজাহাজ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ঠিকই। ৪২ নাবিকের স্মৃতির উদ্দেশে তার জন্য আলাদা করে স্মারক বানানো রয়েছে। অত্যন্ত আধুনিক এই নির্মাণের সঙ্গে ইতিহাসের কোনও সম্পর্ক নেই।
স্থপতি হোগেন/জোহার এই নির্মাণের নকশা এঁকেছেন। হোগেন/জোহারের সংস্থা নরওয়ে জুড়ে প্রচুর নির্মাণের নকশা বানিয়েছে। তাদের নকশায় অত্যাধুনিকতার ছাপ থাকে সব সময়ই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কী নির্মাণ করেছে হোগেন/জোহার?
এটা আসলে একটা পাবলিক টয়লেট। অবাক হচ্ছেন তো? সচরাচর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় যে পাবলিক টয়লেট দেখে আপনি অভ্যস্ত, তার সঙ্গে মেলাতে পারছেন না তো? সম্ভবত মিলবেও না। এমন পাবলিক টয়লেট ভারতের কোনও প্রান্তে রয়েছে বলে জানা নেই। ২০১৮ সালে এই পাবলিক টয়লেটটা তৈরি হয়েছিল।
আশেপাশে জনবসতি না থাকলেও প্রতি দিনই প্রচুর পর্যটক ওই শহিদ স্মারক দেখতে এই জায়গায় আসেন। পরিবেশ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্যই পাবলিক টয়লেট। এর পাশে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার জন্য বসার সিটও বানানো রয়েছে। সিটগুলোও অত্যাধুনিক। পাবলিক টয়লেট এবং তার সঙ্গে বসার সিট খুব মানানসই করে বানানো হয়েছে।
চারপাশের পুরোটাই কাচ দিয়ে তৈরি এই পাবলিক টয়লেটের। টয়লেটে লাইট সেন্সর লাগানো রয়েছে। অন্ধকার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজে থেকেই আলো জ্বলে ওঠে।
পাশের ছবিটা ভারতের পাবলিট টয়লেট। স্বচ্ছ ভারত মিশন পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের ২৭টি রাজ্যে খোলাস্থানে মল-মূত্র ত্যাগ পুরোপুরি বন্ধ করা গিয়েছে। কিন্তু এখনও সচেতনতার প্রসার ঘটানোর প্রয়োজন।