সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ। ছবি: রয়টার্স।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আন্দোলনের মুখ সে। স্কুলপড়ুয়া বাচ্চা মেয়েটির পথে হেঁটে এখন সরব তাবড় নেতামন্ত্রী থেকে গোটা পৃথিবীর মানুষ। অথচ ‘অসুস্থ’ বলে এখনও কম কটূক্তি শুনতে হয় না সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গকে। আজ সে নিজেই মুখ খুলল তার ‘অ্যাসপারগার সিন্ড্রোম’ নিয়ে।
এটি অনেকটা অটিজ়মের মতোই। ২০১৩ সালের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয় সে কথা। অস্ট্রিয়ার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ হ্যান্স অ্যাসপারগার ১৯৪০ সালে এটির বিশেষত্ব ব্যাখ্যা করেছিলেন। তার নামেই ‘অ্যাসপারগার সিন্ড্রোম’। এতে সামাজিক যোগাযোগ স্থাপনে সমস্যা হয়। যেমন, কথা বলতে অসুবিধা, উল্টো দিকে থাকা মানুষের অভিব্যক্তি বুঝতে সমস্যা। গ্রেটার যে এই সিন্ড্রোম রয়েছে, তা ধরা পড়েছিল বছর চারেক আগে। সে নিয়ে কিশোরী নিজেই টুইটারে জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আন্দোলন শুরু করার আগে তার কোনও বন্ধু ছিল না। সে লিখেছে, ‘‘আন্দোলন শুরুর আগে আমার মধ্যে কোনও উদ্যম ছিল না, কিছু করতে ভাল লাগত না, কথা বলতাম না কারও সঙ্গে, কোনও বন্ধু ছিল না আমার। ঘরে একা বসে থাকতাম। খেতেও সমস্যা ছিল।’’
গ্রেটা এ-ও জানিয়েছে, সে আগে কখনও তার সমস্যা নিয়ে কথা বলত না। বরং লুকিয়ে রাখত। কারণ অনেকেই বিষয়টিকে ‘অসুস্থতা’ হিসেবে দেখে, খারাপ কিছু ভাবে। নিজের সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে গ্রেটা বলেছে, ‘‘কখনও কখনও আমি সত্যিই অন্যদের থেকে আলাদা ব্যবহার করতাম। কিন্তু আমার এই আলাদা হওয়াটাকে ‘সুপারপাওয়ার’ হিসেবেই দেখি।’’ অ্যাসপারগার বিশেষজ্ঞ টোনি অ্যাটউড জানিয়েছেন, যাদের এই সমস্যা থাকে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে তারা স্পষ্ট কথা বলে, সৎ হয়, কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল, তা নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য থাকে।
‘#অ্যাসপাইপাওয়ার’ দিয়ে গ্রেটা লিখেছে, ‘‘যখন কেউ ঘৃণা করে, তোমাকে কেমন দেখতে, তোমার অন্য রকম হওয়া নিয়ে ব্যঙ্গ করে, তখন তার অর্থ, সেই লোকটির অন্য কিছু আর করার নেই। জানবে, তুমিই জয়ী।’’ উল্লেখ্য সম্প্রতি অস্ট্রেলীয় কলাম লেখক অ্যান্ড্রু বোল্ট গ্রেটার সৌরচালিত নৌকায় অতলান্তিক মহাসাগর পাড়ি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। নিজের লেখায়, বারবার তাকে ‘মানসিক অসুস্থ’ বলে আক্রমণ করেছিলেন। লিখেছিলেন, ‘ওর গভীর সমস্যা আছে’। বোল্টের মতো ‘নিন্দুকদেরই’ হয়তো আজ জবাব দিল কিশোরী।