তাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককেও সু চি-র মুক্তি চেয়ে পথে। শনিবার। রয়টার্স।
নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে মায়ানমারের সেনা দেশের দখল নেওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। গণতন্ত্র ফেরানোর আর্জি জানিয়েছেন খোদ মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। অভ্যুত্থানের পাঁচ দিনের মাথায় কাল মায়ানমার সেনার সঙ্গে প্রথম বার ফোনে কথা বললেন মায়ানমারে নিযুক্ত গুতেরেসের বিশেষ প্রতিনিধি ক্রিস্টিন স্ক্রানার বার্গনার। উদ্ভূত পরিস্থিতির সমালোচনা করার পাশাপাশি এনএলডি নেত্রী আউং সান সু চি-সহ আটক সব নেতা-মন্ত্রীর অবিলম্বে মুক্তির আর্জিও জানান তিনি।
সূত্রের খবর, মায়ানমার সেনার উপপ্রধান সো উইনের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বিশেষ কাজ হয়নি। এমনকি কোনও আশ্বাসও পাননি ক্রিস্টিন। তাই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে আজ ফের উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনের সদস্য ১৫টি দেশের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘মায়ানমারে গণতন্ত্র ফেরাতে আমাদের একজোট হয়েই সমালোচনা করতে হবে। গত নভেম্বরের মায়ানমারের ভোটে বিপুল জয় নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে এনএলডি। সেনা যে এখন আবার ভোটের দাবি তুলছে, সেই প্রস্তাব খণ্ডন করতেই হবে।’’ চিন, রাশিয়া কার্যত মায়নমারের সেনা-সরকারের পক্ষ নিলেও, ব্রিটেনের তৈরি খসড়া প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে মায়ানমারে আটক সব নেতা-মন্ত্রী অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে নিরাপত্তা পরিষদও।
গত সোমবার রাতারাতি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই ফুঁসছেন মায়ানমারের গণতন্ত্রকামীদের একটা বড় অংশ। জনরোষ বাড়ছে দেখে কাল দেশ জুড়ে ফেসবুক পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছিল মায়ানমারের নয়া সেনা-সরকার। ‘গুজব’, ‘ভুয়ো খবর’ ঠেকানোর ধুয়ো তুলে নিষিদ্ধ ইনস্টাগ্রাম, টুইটারও।
শনিবার তাই সেনা-সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে ইয়াঙ্গন, নেপিদ-সহ বেশ কিছু শহরে রাস্তায় নামলেন হাজার-হাজার মানুষ। ইয়াঙ্গনের সিটি হল-মুখী রাস্তায় কয়েকশো গাড়ির হর্ন, স্লোগানে-প্রতিবাদে রীতিমতো উৎসবের চেহারা। মুখে মাস্ক আর হাতে মোমবাতি নিয়ে রাতেও পথে নামল জনতা। এনএলডি-র পতাকা, নেত্রী সু চি-র ছবি বুকে সেঁটে সরব হলেন দলীয় সমর্থক-কর্মীরা। অবিলম্বে সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। মায়ানমারে গণতন্ত্র এবং বাক্স্বাধীনতার অধিকার ফেরাতে একই আর্জি জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার রক্ষা বিষয়ক সংগঠনও। সেনা তবু অনড়ই। এমনকি এ নিয়ে কোনও মন্তব্যই করেনি তারা।