সব কিছুরই ভাল ও মন্দ, দু’টো দিকই আছে। এখন কে কী ভাবে ব্যবহার করবেন...! অতি পরিচিত এই কথাটাই ফের মনে করিয়ে দিলেন গুগলের ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিইও সুন্দর পিচাই। এক প্রথম সারির মার্কিন দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথাই বললেন তিনি।
প্রশ্নটা উঠেছিল, অন্তর্জালে ভুয়ো খবর, বিদ্বেষমূলক বার্তা ছড়ানো নিয়ে। সুন্দরের বক্তব্য— ইন্টারনেটের অপব্যবহার নিয়ে মানুষের মনে যে ভয়, সেটা খুবই স্বাভাবিক, সঙ্গত। তবে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলোর উপরে আর একটু ভরসা করাই যায়।
তাঁর কথায়, ‘‘চালকহীন গাড়ি থেকে রোগ-নির্ণয় করতে সক্ষম অ্যালগরিদম, এ ধরনের নতুন উদ্ভাবনের পিছনে রয়েছে ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ (সংক্ষেপে ‘এআই’)। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলোর উচিত নির্দিষ্ট নীতি মেনে চলা। ‘এআই’-এর অপব্যবহার রুখতে আগে ভেবে দেখা উচিত কী ভাবে প্রযুক্তির অপব্যবহার হতে পারে।’’ তিনি বলেন, ‘‘শুধু নতুন প্রযুক্তি আনলেই চলবে না বা মেরামতি করলেই চলবে না। আরও সতর্ক হতে হবে। প্রযুক্তির ব্যবহার যেন মানব সভ্যতার পক্ষে বিপজ্জনক না হয়।’’
তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘স্পেসএক্স’ ও ‘টেসলা’-র প্রতিষ্ঠাতা এলন মাস্ক কিছু দিন আগেই সরাসরি বলেছেন, সবাই এত পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আতঙ্কিত, ভবিষ্যতে আরও বিপজ্জনক প্রমাণিত হতে পারে ‘এআই’। এলনের সঙ্গে সহমত বহু প্রযুক্তি-সমালোচক। সুন্দরও তাঁদের পথ ধরেই মনে করিয়ে দিয়েছেন, কালে কালে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে নজরদারির পথ, মারণাস্ত্র কিংবা ভুয়ো খবর ছড়ানোর হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে ‘এআই’।
সুন্দর আরও জানান, বিভিন্ন দেশের নেতামন্ত্রীরা এখনও প্রাণপণ বোঝার চেষ্টা করছেন, ‘এআই’-এর প্রভাব কী হতে পারে। কিংবা কতটা সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনা উচিত। ‘‘মাঝেমাঝে চিন্তা হয়, প্রযুক্তির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কতটা হতে পারে, তার আন্দাজ মানুষের কাছে নেই।’’ মাইক্রোসফ্ট-সহ বেশ কয়েকটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা যেমন সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বেশ কিছু নিয়ম এনেছে। সুন্দর বলেন, ‘‘আমরাও চেষ্টা করছি একগুচ্ছ নিয়ম আনতে। সব কিছু হয়তো ঠিকমতো করতে পারিনি, কিন্তু বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার সময় এসেছে।’’ তবে তাঁর দাবি, ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’কে যদি সঠিক ভাবে ব্যবহার করা যায়, তার উপযোগিতা আকাশছোঁয়া।