শ্রীনিবাস কুচিভোটলা
মনে বোধহয় কিছু একটা কু-ডেকেছিল তাঁর। কিছু দিন আগেই তাই আমেরিকায় থাকার নিরাপত্তা নিয়ে কথায় কথায় স্বামীর কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। অভয় দিয়ে স্বামীই বরং তাঁর আশঙ্কাকে হেলায় উড়িয়ে দিয়েছিলেন। বড়াই করে বলেছিলেন, ‘‘সমস্ত ভাল কিছু এই আমেরিকাতেই হয়।’’ কিন্তু হল ঠিক উল্টো! তাঁর আশঙ্কাকেই সত্যি করে এক বর্ণবিদ্বেষীর গুলিতে মৃত্যু হল স্বামী শ্রীনিবাসের। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে ছলছল চোখে এই কথাগুলোই বার বার আউড়ে যাচ্ছিলেন শ্রীনিবাস কুচিভোটলার স্ত্রী সুনয়না দুমালা। তাঁর স্বামীর কোম্পানির তরফেই ওই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল।
ওই দিন সুনয়না জানান, আমেরিকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরে হামলা প্রায় রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংবাদ মাধ্যম থেকে সেই সমস্ত খবর জানতে পেরে সব সময়েই ভয়ে থাকতেন। তার উপর ট্রাম্প জমানায় অবৈধ অভিবাসী এবং মুসলিমদের প্রতি বিষোদ্গার তাঁর আশঙ্কাকে আরও উস্কে দেয়। যদিও অবৈধ অভিবাসী বা মুসলিম, এই দুইয়ের কোনওটাই তাঁরা ছিলেন না। তবুও আমেরিকা তাঁর কাছে দিনে দিনে একটা আতঙ্কের জায়গা হয়ে উঠেছিল।
সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রীনিবাসের স্ত্রী সুনয়না
সে কারণেই দিন কয়েক আগে তিনি স্বামী শ্রীনিবাসকে জানিয়েছিলেন, আমেরিকায় থাকা আর উচিত হবে না। কিন্তু শ্রীনিবাসের আমেরিকার উপর চূড়ান্ত ভরসা ছিল। তাই আমেরিকা ছেড়ে ফিরে আসার কথায় পাত্তাই দেননি ৩২ বছরের দক্ষিণ ভারতীয় ওই যুবক। উপরন্তু জানিয়ে দেন, যত কিছু ভাল সব এখানেই হয়। স্বামীর কথায় খানিকটা ভরসা পেয়েছিলেন সুনয়নাও। কিন্তু বুধবার রাতের ঘটনা সব কিছু ওলোটপালোট করে দেয়। সংখ্যালঘুদের উপরে ঘটে চলা এই ‘হেট ক্রাইম’ আদৌ কি বন্ধ করতে উদ্যোগী হবে আমেরিকা? আমেরিকা কি আদৌ তাঁদের জন্য নিরাপদ? এই প্রশ্নই এখন সুনয়নার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।