আপাতত গীতা থেকে যাচ্ছেন আইএমএফেই।
আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের (আইএমএফ) মুখ্য অর্থনীতিবিদের পদে তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ মাসে। শোনা যাচ্ছিল, প্রথম মহিলা হিসাবে ওই দায়িত্ব সামলানোর পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার জগতে ফিরে যাবেন গীতা গোপীনাথ। কিন্তু সকলকে কিছুটা চমকে দিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার (ম্যানেজিং ডিরেক্টর) ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা জানালেন, আপাতত গীতা থেকে যাচ্ছেন আইএমএফেই। তবে ফার্স্ট ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এফডিএমডি) হিসেবে। যা ওই প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ। প্রথম ভারতীয় কিংবা ভারতীয় বংশোদ্ভূত অর্থনীতিবিদ হিসেবে ওই দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। ফের ইতিহাস।
কোভিডে ঘায়েল বিশ্ব অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই গত পৌনে দু’বছর খুঁজে চলেছেন গীতা-ক্রিস্টালিনা জুটি। এখন ওমিক্রন স্ট্রেন যখন ফের চোখ রাঙাচ্ছে, তখন অর্থনীতির উপরে তার বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার দায়িত্ব আরও বেশি করে বর্তাবে গীতার উপরে। তাঁর নিজের কথায়, ‘‘এফডিএমডি পদে কাজের সুযোগ পেয়ে আমি সম্মানিত ও অভিভূত।’’
পরিচিতি
জন্ম: ৮/১২/৭১, কলকাতা
পড়াশোনা: • অর্থনীতিতে স্নাতক: লেডি শ্রীরাম কলেজ, দিল্লি
• স্নাতকোত্তর: দিল্লি স্কুল অব ইকনমিক্স, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়
• পিএইচডি: প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষকতা: শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়
প্রশাসনে: • কেরল সরকারের আর্থিক উপদেষ্টা
• আইএমএফের প্রথম মহিলা মুখ্য অর্থনীতিবিদ
• আইএমএফের ফার্স্ট ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (২০২২ সাল থেকে)
গীতার জন্ম কলকাতায়। পেশার সূত্রে বাবা টি ভি গোপীনাথকে কয়েক বছর থাকতে হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। গীতার জন্ম তখনই। পিনারাই বিজয়ন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে গীতাকে আর্থিক উপদেষ্টা করেছিলেন। সেই গীতাই আইএমএফের মুখ্য অর্থনীতিবিদ হওয়ার পরে প্রশ্ন ওঠে, তাঁকে ভারতীয় অর্থনীতির হাল ফেরানোয় কাজে লাগানোর চেষ্টা হল না কেন? মাঝে শোনা গিয়েছিল, কে সুব্রহ্মণ্যন কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য উপদেষ্টা পদ থেকে সরে যাওয়ার পরে সেখানে আনার চেষ্টা হতে পারে গীতাকে। কিন্তু উল্টো দিকে তেমনই অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন, এখন তিনি আমেরিকার নাগরিক। তা ছাড়া, নোটবন্দির কড়া সমালোচক তিনি।
এখন এফডিএমডি আমেরিকার অর্থনীতিবিদ জিওফ্রে ওকামোটো। তাঁর কাজের মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ মাসে। জর্জিয়েভা জানান, করোনায় পাল্টে যাওয়া দুনিয়ায় ১৯০টি সদস্য দেশ কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে। এ অবস্থায় আধিকারিকদের দায়িত্বে কিছু রদবদল হচ্ছে। এফডিএমডির কাজ হবে বিশ্ব পরিস্থিতি ও নীতিতে নজর রাখা। গবেষণা এবং প্রকাশনার কাজ সামলানো। খারাপ সময়ে বিশ্ব অর্থনীতির বিশ্লেষণ ও সংস্থা পরিচালনায় গীতার উপরে পূর্ণ আস্থা রাখার কথা জানিয়েছেন তিনি।