দাউদাউ: জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে প্যারিসের রাস্তায় বিক্ষোভ। শনিবার। এএফপি
এই নিয়ে তিন সপ্তাহ হয়ে গেল। ক্ষোভের আঁচ কমা তো দূর, জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ আরও জোরালো হচ্ছে ফ্রান্সে। তিন সপ্তাহ আগে ফ্রান্সের গাড়ি চালকেরা যে ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলন শুরু করেছিলেন, তা ধীরে ধীরে গণ আন্দোলনের রূপ নিচ্ছে।
পর পর দুই শনিবারের মতো আজও ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে সবজেটে হলুদ জ্যাকেট (পোশাকি নাম ইয়েলো ভেস্ট) পরে শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিলে হাঁটেন গাড়িচালকেরা। প্যারিসে কিন্তু আন্দোলন আগ্রাসী চেহারা নেয়। জ্বালানির দামবৃদ্ধির পাশাপাশি জিনিসপত্রের দাম বাড়ার প্রতিবাদেও বহু মানুষ পথে নামেন।
দোকানদার থেকে হোটেল মালিক— মিছিলে শামিল হন সকলেই। ব্যারিকেড গড়ে, রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়েন অনেকে। সঁজে লিজে চত্বরে পুলিশও তাঁদের আটকাতে কাঁদানে গ্যাস, জল কামান, গ্রেনেড ছো়ড়ে।
অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী ক্রিস্তোফ ক্যাস্তানে টুইট করে জানিয়েছেন, সঁজে লিজে চত্বরে অন্তত ১৫০০ বিক্ষোভকারী জমা হয়েছিলেন। গ্রেফতার হন ১০৭ জন। কেউ বা আগুন জ্বালিয়ে পরিস্থিতি আরও তাতিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কালো হুডি পরা এক দল বিক্ষোভকারী কাঠ, প্লাইউডের টুকরো হাতে জড়ো হয়েছিলেন আর্ক দে ত্রিয়ম্ফের সামনে। স্লোগান দিতে দিতে কাঠ-কুটো জড়ো করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁরা। সঁজে লিজে-র পশ্চিম প্রান্তের বিশাল তোরণদ্বার প্যারিসের পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। এক পথচারীর কথায়, ‘‘আর্ক দে ত্রিয়ম্ফের সামনে এমন দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখে সত্যিই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।’’
গত এক বছর ধরে ফ্রান্সে পেট্রল-ডিজেলের দাম হু-হু করে বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় যা প্রায় ২৩ শতাংশ বেশি! ২০০০ সালের পর থেকে ফ্রান্সে জ্বালানির দাম এতটা বেড়ে যাওয়ার নজির নেই।
সম্প্রতি বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও দেশের মানুষকে তেমন আশার কথা শোনাতে পারেননি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। উল্টে সরকার জানিয়েছে, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তেলের দাম আরও বাড়বে। এর পরেই প্রতিবাদে নামেন ফ্রান্সের মানুষ। এ দিন মাকরঁ-র বিরুদ্ধে বারবার স্লোগান ওঠে।