ফাইল চিত্র।
আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক করতে আগামিকাল তাজিকিস্তান পৌঁছচ্ছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তার এক দিন পরে, অর্থাৎ ১৭ তারিখ ওই তাজিকিস্তানেই এসসিও ভুক্ত রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে সংযুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এসসিও সম্মেলনেও গুরুত্ব পেতে চলেছে তালিবান সরকার ও গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ।
এসসিও সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী কাবুল পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের অবস্থান তাঁর বক্তৃতায় বিস্তারিত তুলে ধরবেন। তালিবান সরকারে হক্কানি নেটওয়ার্কের প্রাধান্য রক্তচাপ বাড়িয়ে রেখেছে সাউথ ব্লকের। তালিবান সরকার গঠনের গোটা প্রক্রিয়ায় প্রকাশ্যেই সমর্থন জানিয়েছে বেজিং। সেই বেজিংই এসসিও সম্মেলনের পুরোধা। সঙ্গে থাকছে রাশিয়া, যারা তালিবান নিয়ে দোলাচলে রয়েছে। এক দিকে তালিবান সরকারকে মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে, পাশাপাশি প্রতিবেশী রাষ্ট্রে সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করছে।
ফলে সব মিলিয়ে এসসিও বৈঠক থেকে কাবুল নিয়ে কোনও স্পষ্ট দিশা পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে নিঃসংশয় নয় নয়াদিল্লি। তবে বিদেশমন্ত্রীর বৈঠকগুলি হক্কানি-বিরোধী একটি জোট তৈরির প্রথম ধাপ হতে চলেছে বলেই দাবি করছে বিদেশ মন্ত্রক।
দু’টি পর্যায়ে, ১৬ এবং ১৭ তারিখ বৈঠক করার কথা জয়শঙ্করের। এসসিও এবং রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট সিএসটিও (রাশিয়া লেড কালেক্টিভ সিকিয়োরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশন)-ভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রী ও বিভিন্ন কর্তাদের সঙ্গে সমবেত বৈঠক হবে। পাশাপাশি, ইরান এবং রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে কাবুল নিয়ে পার্শ্ববৈঠক করার কথা আছে জয়শঙ্করের। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ান-এর দিল্লি আসার কথা ছিল সোমবার। কিন্তু আপাতত সেই সফর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাজিকিস্তানেই ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকটি হয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গেও তালিবান সন্ত্রাস নিয়ে কথা বলবেন জয়শঙ্কর। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তালিবান আফগানিস্তান দখল নেওয়ার ঠিক আগেই মস্কোতে দু’জনের আলোচনা হয়েছিল। সেখানে অবশ্য মতের
মিল হয়নি।
রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী ভারতকে জানিয়েছিলেন, তালিবানের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছে, তারা আফগানিস্তানের বাইরে নিজেদের বুটের ছাপ রাখবে না। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে যখন দেখা যাচ্ছে সেই ৯৬ সালের কট্ট্ররপন্থী মুখগুলিকেই ফিরিয়ে আনা হচ্ছে, বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলির প্রভাব এই সরকারে বাড়ছে, তখন স্বস্তিতে থাকতে পারছে না রাশিয়াও।