ফাইল চিত্র।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে তীব্র মতপার্থক্য তৈরি হল ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে। জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে যখন কিছুটা চাপের মধ্যে নরেন্দ্র মোদী সরকার, তখন এই ঘটনা কূটনৈতিক স্তরে নয়াদিল্লির অস্বস্তি বাড়াল বলেই মনে করা হচ্ছে।
সোমবার গভীর রাতে লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি পাশ করিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার পরে ভারতীয় সময় ভোর রাতে ট্রাম্প সরকারের বিদেশ মন্ত্রক সংক্রান্ত কমিটির পক্ষ থেকে একটি কড়া টুইট করে বলা হয়েছে, ‘ভারত এবং আমেরিকার মূল ভিতই হল ধর্মীয় বহুত্ববাদ। এই মূল্যবোধ আমাদের দু’দেশেরই কেন্দ্রস্থলে রয়েছে। নাগরিকত্বের জন্য ধর্মীয় পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি মূল গণতান্ত্রিক ভিতকেই দুর্বল করছে’। আমেরিকার স্বশাসিত সংস্থা ‘ইউএস কমিশন ফর ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ (ইউএসসিআরএফ) আর এক ধাপ এগিয়ে অমিত শাহের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করার প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন সরকারকে। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এই বিলে বিশেষ করে শরণার্থী মুসলিমদের বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই বিল একটি বিপজ্জনক দিকে মোড় নিচ্ছে। এটি ভারতের সম্পদশালী ইতিহাস এবং ভারতীয় সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ বহুত্ববাদের বিরোধী।’
একটু সময় নিয়ে হলেও আজ বিকেলে ইউএসসিআরএফ-এর বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছে মোদী সরকার। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইউএসসিআরএফ-এর বিবৃতি ঠিক নয় এবং অযাচিতও বটে’। নয়াদিল্লির বক্তব্য, ‘যারা সত্যিকারের ধর্মীয় স্বাধীনতা চায়, তাদের এই বিলকে সমালোচনা নয়, বরং স্বাগত জানানো উচিত। নাগরিক পঞ্জি অথবা নাগরিকত্ব বিলের মাধ্যমে কোনও ধর্মের ভারতীয় নাগরিককেই তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে না।’ এর পরে সুর চড়িয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘আমেরিকা-সহ যে কোনও দেশেরই অধিকার রয়েছে তার নাগরিকদের চিহ্নিত করার। সেটা করতে গিয়ে কী নীতি নেওয়া হবে, সেটা সংশ্লিষ্ট দেশের অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। এটা খুবই নিন্দাজনক যে, ওই সংস্থা এ ব্যাপারে পক্ষপাতদুষ্ট মানসিকতা নিয়ে চলছে’।