পার্কল্যান্ডে স্টোনম্যান স্কুলের বন্দুকবাজ নিকোলাস ক্রুজ
ভুলের খেসারত ১৭টি প্রাণ! মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই স্বীকার করেছে, পার্কল্যান্ডে স্টোনম্যান স্কুলের বন্দুকবাজ নিকোলাস ক্রুজ যে বিপজ্জনক, তাদের হাতে এক মাস আগেই সে তথ্য এসেছিল। এটা এফবিআইয়েরই ব্যর্থতা যে তারা তখনই সক্রিয় হয়নি। বিপর্যয় তা হলে হয়তো বা এড়ানো যেত। পাশাপাশি নিজের পুরনো স্কুলে ঢুকে হত্যালীলা চালানোর কথা তদন্তকারীদের কাছে কবুল করেছে ১৯ বছরের ঘাতক নিকোলাস ক্রুজও।
আমেরিকায় কখনও স্কুলে, কখনও শপিং মলে, কখনও বা নাইটক্লাবে বিভিন্ন সময়ে একের পর এক বন্দুকবাজের হামলা কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্য প্রাণ। তা সত্ত্বেও আত্মরক্ষার নামে বন্দুক রাখার যে আইন নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে তৈরি হয়েছে, তা-ই এখন চরম দুশ্চিন্তার কারণ আম মার্কিনদের কাছে। প্রতিবারের মতো এ বারও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এই হামলার পিছনে মূল কারণ ঘাতকের মানসিক সমস্যা। টেক্সাসের গির্জায় হামলার সময়েও যা বলেছিলেন, এ বারও সেই সুর। বন্দুক আইনে নিয়ন্ত্রণ আনার ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে নারাজ তিনি। স্টোনম্যান স্কুলে গুলিচালনার ঘটনার পরে তিনি এক টেলিভিশন বার্তায় সরাসরি শিশুদের উদ্দেশে কথা বলেন।
ট্রাম্পের বক্তব্য, ‘‘আমেরিকার সব বাচ্চাকে বলছি, কখনও ভাববে না তোমরা একা। আমরা তোমাদের ভালবাসি। তোমাদের সুরক্ষার জন্য যা দরকার, আমরা করব। সাহায্য লাগলে শিক্ষকের কাছে যাও, বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বল, বা পুলিশকে জানাও।’’ স্কুলে নিরাপত্তা বাড়াতে আরও কিছু নীতির কথা ভাবা হবে বলেও জানান তিনি। পার্কল্যান্ডের ওই স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে ট্রাম্পের। কিন্তু প্রেসিডেন্টের আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন লোরি আলহাডেফ। স্টোনম্যান স্কুলের পড়ুয়া ১৪ বছরের মেয়ে অ্যালিসাকে হারিয়ে ক্ষুব্ধ মা বলছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, প্লিজ কিছু করুন। কাজ দরকার। এখনই। বাচ্চাগুলোকে সুরক্ষা দিতে হবে।’’ নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও এক জন বন্দুক নিয়ে ঢুকে গেল বাচ্চাদের স্কুলে, প্রশ্ন তাঁর। সরাসরি ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে লোরি বলছেন, ‘‘বাচ্চাদের হাতে যাতে বন্দুক না ওঠে, সেটা অন্তত দেখুন। আপনি অনেক কিছুই করতে পারেন। শিশুদের সঙ্গে এই অন্যায় চলতে পারে না।’’
ক্রুজ তদন্তকারীদের জানিয়েছে, সে উবের নিয়ে দুপুর দু’টো কুড়ি মিনিটে স্কুলে পৌঁছয়। তার তিন মিনিটের মধ্যেই একের পর এক ক্লাসরুমে গুলি চালাতে শুরু করে। হত্যালীলা চালিয়ে এক বার ওয়াল মার্ট এবং তার পরে ম্যাকডোনাল্ডস-এ কিছু ক্ষণ কাটায় সে। ঘটনার চল্লিশ মিনিটের মাথায় পুলিশ তাকে ধরে। গত বছর সেপ্টেম্বরে তার ইউটিউব পোস্টে লেখা ছিল, ‘‘আমি পেশাদার স্কুল শ্যুটার হতে চাই।’’ এই বার্তাও এফবিআইয়ের হাতে এসেছিল। কিন্তু সংস্থার দাবি, তারা নেট দুনিয়া যথেষ্ট ঘেঁটেও তখন চিহ্নিত করতে পারেনি এই পোস্টের পিছনে কে রয়েছে।