—ছবি রয়টার্স।
ভাঙল, তবু মচকাল না।
ভুয়ো খবর ও তথ্য ফাঁসের অভিযোগে জেরবার ফেসবুক নিজেদের পিঠ বাঁচাতে ‘ডিফাইনার্স’ নামে একটি জনসংযোগকারী সংস্থাকে প্রচারে নামিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন ধনকুবের জর্জ সোরোস-সহ বহু সমালোচক। সিলিকন ভ্যালির প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থাগুলির নামে নেতিবাচক খবর ছড়ানোর অভিযোগও ছিল সংস্থার বিরুদ্ধে। প্রথম থেকে সেই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করছিল ফেসবুক। সম্প্রতি একটি মার্কিন সংবাদপত্রে একটি রিপোর্ট প্রকাশের পর শেষমেশ রণে ভঙ্গ দিল এই সোশ্যাল মিডিয়া সংস্থা। বুধবার ফেসবুকের জনসংযোগ বিভাগের মুখ্য আধিকারিক এলিয়ট স্কার্জ অভিযোগের সত্যতা আংশিক ভাবে মেনে নিয়েছেন। সংস্থার কর্মীদের তিনি লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, জনসংযোগকারী সংস্থা ‘ডিফাইনার্স’কে ফেসবুক ব্যবহার করেছে। আর এই দায় তাঁরই। স্কার্জের পোস্টের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি স্বীকার করেছেন ফেসবুকের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শেরিল স্যান্ডবার্গ। সংস্থার বিভিন্ন ই-মেল ও নথিতে ‘ডিফাইনার্স’-এর উল্লেখের কথাও স্বীকার করেছেন তিনি। তবে জ়াকারবার্গ, স্যান্ডবার্গের মতো স্কার্জও ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের সকলেরই দাবি, ‘ডিফাইনার্স’ শুধুমাত্র জনসমক্ষে প্রকাশিত সাধারণ তথ্যই ব্যবহার করেছে। গোপন নজরদারি চালায়নি।
অথচ এই স্যান্ডবার্গ এক সময় সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে বলেছিলেন, ডিফাইনার্স বলে কোনও সংস্থার নামই তিনি শোনেননি। সম্প্রতি সংবাদপত্রে রিপোর্টটি প্রকাশের পরে খানিকটা চাপে পড়েই বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন স্যান্ডবার্গ। তার পরেই স্কার্জের এই স্বীকারোক্তি।
প্রসঙ্গত, ফেসবুক ছাড়বেন বলে গত জুনেই জানিয়ে দিয়েছিলেন স্কার্জ। অনেকের মতে, প্রায় এক দশক ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজ করা স্কার্জ কর্মক্ষেত্র বদলাতে চান বলে আগেই ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তাই যাওয়ার আগে এই দায় স্বীকার তাঁর পক্ষে অনেকটাই সহজ হল।
‘ডিফাইনার্স’ নিয়ে স্কার্জ তবে কোন অভিযোগটা মেনে নিলেন?
গত বছর গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস, ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছিল ফেসবুক। এ বছরের গোড়ায় দাভোসের এক সভায় সেই প্রসঙ্গে জর্জ সোরোস বলেন, ‘‘ফেসবুক সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর।’’ শুরু হয় ফেসবুক নিষিদ্ধ করার পাল্টা প্রচার— ‘ফ্রিডম ফ্রম ফেসবুক’। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে গিয়েই ‘ডিফাইনার্স’কে তারা কাজে লাগায় বলে দাবি করেছে ফেসবুক। স্কার্জের দাবি, তাঁদের সন্দেহ ছিল ফেসবুক বিরোধীদের প্রচারে টাকা ঢালছেন সোরোস। বিষয়টি আদতে সত্য কি না তা নিয়ে খোঁজ চালায় ‘ডিফাইনার্স’।
মার্কিন সেনেটের সামনে হাজির হয়ে তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আগেই মেনে নিয়েছিলেন সংস্থার চেয়ারম্যান মার্ক জ়াকারবার্গ। তবে এই প্রসঙ্গে মুখ খুলে জ়াকারবার্গ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সংস্থার চেয়ারম্যানের পদ তিনি ছাড়ছেন না।