—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাঙালিদের কাছে এ বছরের পুজো অন্য বছরের থেকে অনেকটাই আলাদা। সেটা দেশেই হোক, বা বিদেশের মাটিতে। মহালয়ার ভোরেও রাস্তায় নেমেছেন প্রতিবাদে মুখর কলকাতাবাসী। আর বিদেশে বসবাসকারী বাঙালিরা, যাঁরা দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সর্ব ক্ষণ চোখ রেখে চলেছেন, তাঁরাও প্রতি মুহূর্তে আর জি করের ঘৃণ্য ও মর্মান্তিক ঘটনার সুবিচার চাইছেন। প্রতিবাদ, বিচারের দাবি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে দুর্গোৎসবের অংশ হয়ে উঠেছে।
এ বছর আমাদের দুর্গাপুজোর তৃতীয় বর্ষ। ‘ভূমি—ইন্ডিয়ান কালচারাল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর পরিচালনায়, লিসবনের ভারতীয় দূতাবাস এবং আরয়োস প্যারিশ কাউন্সিল (লিসবন)-এর সহযোগিতায় ২০২২-এ কুমোরটুলি থেকে মাতৃপ্রতিমা এনে যে দুর্গোৎসবের সূচনা হয়েছিল, সেই পুজোর আয়োজন আকার এবং আয়তনে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১-এর ডিসেম্বর ইউনেস্কো দুর্গাপুজোকে ‘ইনট্যানজিব্ল কালচারাল হেরিটেজ’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় পুজো শুরুর উৎসাহ আরও গতি পেয়েছিল।এ বছর যখন পুজোর প্রস্তুতি চলছে, তখনই কলকাতায় ঘটে যায় ওই জঘন্য অপরাধ। কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে থেকেও আমরা চেয়েছিলাম এই ঘটনার প্রতিবাদে শামিল হতে, দেশে আমাদের পরিবার-পরিজন যে ভাবে রাস্তায় নেমেছেন, অন্তত মনে মনে তাঁদের পাশে থাকতে।
সেই ভাবনা থেকেই এ বছর আমাদের পুজোকে অন্য ভাবে সাজানো হচ্ছে। স্যুভেনিরে এ বিষয়ে কিছু লেখা রাখা হয়েছে। তা ছাড়া, মহাষ্টমীর সন্ধ্যায় বিচারের দাবি জানিয়ে সমবেত ভাবে মোমবাতি জ্বালিয়ে আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরুর আয়োজন করা হয়েছে।
লিসবনের এই পুজোয় বাঙালিদের পাশাপাশি বহু অবাঙালি এবং বেশ কিছু পর্তুগিজ়ও অংশ নেন। সর্বজনীন এই উৎসবকে বিশ্বজনীন করে তোলার প্রচেষ্টায় মিলে যাচ্ছে বিচারের দাবি। মায়ের কাছে আমাদের প্রার্থনা, ওই ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত অসুরদের এখনই নিধন করা হোক।