বাড়ন্ত জীবনদায়ী ওষুধ, পাকিস্তানের হাসপাতালে প্রায় বন্ধ যাবতীয় চিকিৎসা। প্রতীকী ছবি।
দেশের আর্থিক সঙ্কটের অভিঘাত এ বার সরাসরি এসে পড়ল পাকিস্তানের স্বাস্থ্য পরিষেবাতেও। জীবনদায়ী ওষুধের অভাবের জেরে সে দেশে শিকেয় উঠেছে স্বাস্থ্য পরিষেবা। এমনকি মাথা যন্ত্রণার ওষুধও নাকি মিলছে না। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, সরকারি হাসপাতালগুলিতে মাত্র বারো দিনের ওষুধ মজুত রয়েছে। তার পর কী হবে, জানেন না কেউই। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিকে স্বল্প মূল্যে আরও বেশি পরিমাণ ওষুধ প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছে দেশের সরকার। কিন্তু ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির সংগঠনের অভিযোগ, ওষুধ তৈরির কাঁচামাল তাদের হাতে নেই। যতক্ষণ না তা হাতে আসছে, ততক্ষণ চাহিদা মেনে উৎপাদন সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে তারা।
পাকিস্তানে তৈরি হওয়া যাবতীয় ওষুধের ৯৫ শতাংশ উপাদানই আসে অন্যান্য দেশ থেকে। মূলত প্রতিবেশী ভারত এবং চিন থেকে ওষুধের কাঁচামাল আমদানি করে পাকিস্তান। কিন্তু আর্থিক সঙ্কটের কারণে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রাভান্ডারও প্রায় শেষ। ফলে অন্য দেশ থেকে কিছু আমদানি করার ক্ষেত্রে আমেরিকান ডলারের যে জোগান থাকা প্রয়োজন, তা বর্তমানে পাকিস্তানের নেই। ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির অভিযোগ, সে দেশের ব্যাঙ্কগুলিও ঋণ দিতে চাইছে না। তা ছাড়া মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি নানা কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বেড়েছে পাকিস্তানে।
পাকিস্তান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (পিএমএ) এই বিষয়ে পাকিস্তানের শাহবাজ় শরিফকে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছে। কিন্তু পিএমএ-র অভিযোগ, সরকার ওষুধ ঘাটতি কতটা, তা জরিপ করতে গিয়ে সময় নষ্ট করছে। কার্যকরী কোনও পদক্ষেপ করছে না। যাবতীয় আন্তর্জাতিক সীমান্তপথ খুলে দিয়ে ভারতের মতো পড়শি দেশগুলোর কাছ থেকে ওষুধের কাঁচামাল কেনার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে তারা। অন্যদিকে চিকিৎসকরা আপাতত জটিল রোগ ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের দিন পিছিয়ে দিচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, দুরারোগ্য ব্যাধির ওষুধ তো বটেই সাধারণ জ্বর কিংবা মাথা যন্ত্রণার ওষুধও মিলছে না দেশে। তাই অনেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী দেখাও বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।