ছবি এএফপি।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পদ থেকে সরানো হবে কি না, তার জন্য মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সেনেটে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে গত কাল থেকেই। এর মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসের একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, তথ্যপ্রমাণ ঘেঁটে বোঝা যাচ্ছে, ইউক্রেনকে নিরাপত্তা খাতে সাহায্য করতে কংগ্রেসে যে বরাদ্দ পাশ হয়েছিল, তা আটকে দিয়ে আইন লঙ্ঘন করেছে হোয়াইট হাউস।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, গভর্নমেন্ট অ্যাকাউন্টেবিলিটি অফিসের (জিওও) ওই রিপোর্ট ট্রাম্পের জন্য কিছুটা ধাক্কা বটে, কিন্তু এই বিষয়টি রিপাবলিকান-প্রধান সেনেটের শুনানিতে কত দূর উঠে আসবে, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
সেনেটের বিতর্কের উত্তাপ গায়ে না মেখে প্রেসিডেন্ট অবশ্য বহু দূরে দাভোসের সুইস স্কি রিসর্টে চলে যাচ্ছেন আগামী সপ্তাহে। কারণ তিনি আত্মবিশ্বাসী, সেনেটের শুনানিতে তাঁর কোনও সমস্যাই হবে না। এখানে ৫৩ জন রিপাবলিকান সেনেটরের কেউই তাঁকে সরানোর পক্ষে সওয়াল করেননি। তাঁকে পদ থেকে সরাতে প্রয়োজন দুই-তৃতীয়াংশ ভোট। যা কোনও মতেই জোগাড় হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, ট্রাম্পের টিমে তাঁর হয়ে লড়াই চালাবেন রিপাবলিকান আইনজীবী কেন স্টার, যিনি প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের ইমপিচমেন্টের সময়ে তদন্তকারী দলে ছিলেন এবং থাকবেন আইনজীবী অ্যালান ডারশোউইৎজ।
আগামী সপ্তাহে মঙ্গলবার থেকেই ইমপিচমেন্ট নিয়ে সওয়াল-জবাব শুরু হবে সেনেটে। ওই দিনই ওয়র্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন শুরু। ট্রাম্পের মন্তব্য, ‘‘আমি দাভোস চলে যাচ্ছি। বিশ্বের বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা হবে। থাকবেন অন্য বিশ্ব নেতারাও।’’ আর সেনেটের শুনানি নিয়ে তিনি যে এতটুকু বিচলিত নন, বুঝিয়ে দিয়েছেন স্পষ্ট। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘আমার বিশ্বাস, এটা খুব দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। তা ছাড়া এটা তো একটা বিশেষ পক্ষেরই কাজ।’’
যে সব সেনেটর ট্রাম্পের পক্ষে বা বিপক্ষে সাক্ষ্য দেবেন, গত কাল তাঁরা শপথবাক্য পাঠ করেছেন। বিপক্ষে সওয়াল করতে হাউস থেকে সাত জন প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন ডেমোক্র্যাটেরা। এঁদের নেতৃত্বে আছেন অ্যাডাম শিফ। আজ তিনিই সেনেটের ফ্লোরে এসে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ওঠা মূল দু’টি অভিযোগ (ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ইউক্রেন নিয়ে কংগ্রেসের কাজে বাধা দেওয়া) পড়ে শোনান।
ইতিমধ্যে হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি আবার আঙুল তুলেছেন ফেসবুকের দিকে। তাঁর মতে, মার্কিন জনতাকে ভুল পথে চালিত করছে এই সামাজিক মাধ্যম। তিনি বলেছেন, ‘‘ওরা শুধু নিজেদের কর ছাড় নিয়ে ভাবে। তারা প্রশাসনকে সুবিধা করে দিচ্ছে। গত নির্বাচনে রাশিয়া থেকে যে অর্থ এসেছে, তা নিয়েও ওরা কিছু বলেনি। ওদের মনেই হয়নি, এটা নিয়ে কিছু বলা উচিত। ওরা একেবারেই দায়িত্বজ্ঞানহীন।’’