এফবিআইয়ের শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকদের তিরস্কারও করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এএফপি।
গোয়েন্দা-প্রধানরা অনেক কিছুই বলেন। তা বলে সব কি মানতে হবে? মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অন্তত তেমনটাই ভাবেন। উদাহরণ হিসেবে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার প্রসঙ্গ তুলেছেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, ওই সব দেশ সম্পর্কে গোয়েন্দা-প্রধানদের মূল্যায়ন ঠিক নয়।
গত সপ্তাহে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ এবং গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকদের এ নিয়ে তিরস্কারও করেছেন প্রেসিডেন্ট। মার্কিন কংগ্রেসের সামনে ইরান, উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গে ওই আধিকারিকদের বক্তব্য ট্রাম্পের অবস্থানের সঙ্গে মেলেনি! এ ব্যাপারে একটি মার্কিন চ্যানেলে বিস্তারিত মতামত জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
গত সপ্তাহে কংগ্রেসের সামনে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার অধিকর্তা ড্যান কোটস এবং সিআইএ অধিকর্তা জিনা হ্যাসপেল আইনসভার সদস্যদের বলেছিলেন, ইরান ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি মেনে চলছে। এখন ট্রাম্প জানাচ্ছেন, তাঁর গোয়েন্দা-কর্তাদের ধারণা ঠিক নয়। ইরান পরমাণু-অস্ত্র প্রকল্প নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এই সূত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট মনে করিয়েছেন সাদ্দাম হুসেনের বিরুদ্ধে আমেরিকার অভিযানের কথা! ইরাকি ওই নেতার কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে বলে খবর ছিল মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে। তার পর অভিযানে সাদ্দামকে কাবু করা গেলেও ওই দাবির প্রমাণ মেলেনি। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন কী করছে, নিজেরাই জানে না। ওরা এমন একটা যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলল আমাদের, যাতে অংশ নেওয়ার কথাই নয়।’’ ট্রাম্পের বক্তব্য, গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের জমানার সেই অভিযানে আমেরিকা পশ্চিম এশিয়ায় ৭ লক্ষ কোটি ডলার খরচ করেছিল। কয়েকশো মানুষের প্রাণ গিয়েছিল।
ইরানের ক্ষেত্রেও তথ্য জোগাড়ে একই ভুল ঘটেছে বলে মনে করেন ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘‘আমি যখন ইরানের দিকে তাকাই, বুঝতে পারি একটা দেশ কী পরিমাণ সমস্যা তৈরি করতে পারে!’’
উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি নিয়েও গোয়েন্দা কর্তাদের সঙ্গে একমত নন ট্রাম্প। গোয়েন্দাদের মত, উত্তর কোরিয়া কখনওই পরমাণু অস্ত্র সম্পূর্ণ নির্মূল করবে না। কিন্তু পিয়ংইয়্যাংয়ের শাসক কিম জঙের উনের সঙ্গে বৈঠকের পরে ট্রাম্প আশাবাদী। বস্তুত কিমের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠক নিয়েও আগ্রহী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। প্রথম বৈঠকের পর থেকে দুই নেতাই উত্তর কোরিয়ায় পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কথা বলে চলেছেন। কিন্তু ঘটনা হল, এখনও এ নিয়ে খাতায়কলমে কিছু হয়নি। উত্তর কোরিয়াও নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে অতি-সক্রিয় হয়েছে, এমনটাও বলা যাবে না।