তাঁর উপর চাপ বাড়ছিলই। কিন্তু সমাধান বার করতে গিয়ে উল্টে আরও বিতর্কে জড়ালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার স্কুলে বন্দুকবাজের হানা ঠেকাতে এ বার শিক্ষক ও স্কুলকর্মীদের বন্দুক রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যার ফলে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। ডেমোক্র্যাটরা তো বটেই, কিছু রিপাবলিকান নেতাও ট্রাম্পের এই বক্তব্যের প্রবল সমালোচনা শুরু করেছেন।
ফ্লরিডার স্কুলে হামলার পর থেকেই অস্ত্র আইনে রাশ টানা নিয়ে সরব হয়েছেন আমেরিকার মানুষ। দিন চারেক আগে পার্কল্যান্ডের ওই স্কুলের সামনে ছাত্রছাত্রী আর অভিভাবকদের একটি জমায়েতে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল স্কুল পড়ুয়ারা। দু’দিন আগে ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের সামনের রাস্তায় শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ দেখান প্রচুর ছাত্রছাত্রী।
এই পরিস্থিতিতে কাল হোয়াইট হাউসে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক আর শিক্ষকদের একাংশের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ট্রাম্প। এই ধরনের বৈঠক হোয়াইট হাউসের ইতিহাসে বিরল। সেখানে পার্কল্যান্ডের মারজরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুল তো বটেই, ছিলেন অন্য কিছু স্কুলে হামলায় নিহত ছাত্রছাত্রীদের বাবা-মায়েরাও। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং শিক্ষা সচিব বেটসি ডিভসও। কাল প্রত্যেকের কথাই মন দিয়ে শুনেছেন প্রেসিডেন্ট। কেউ হারিয়েছেন নিজের সন্তানকে। কেউ বা প্রাণের চেয়ে প্রিয় বন্ধুকে। কেউ নিজের নিহত ছেলের লেখা কবিতা পড়ে শুনিয়েছেন। কেউ আবার প্রতিদিন প্রাণ ভয়ে স্কুলে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বৈঠকে উপস্থিত সকলেরই সমবেত প্রশ্ন ছিল, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তায় সরকার কী করতে চলেছে। ট্রাম্প প্রত্যেককেই আশ্বস্ত করেছেন, অস্ত্র আইনে বদল আসবেই। তাঁর কথায়, ‘‘আমি চাই আপনাদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা আর কারও সঙ্গে যেন না হয়। এত দিন অস্ত্র আইন নিয়ে যা যা বলা হয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি কিছু করে দেখাব আমরা।’’
আরও পড়ুন: সোল যাচ্ছেন ইভাঙ্কা
এক অভিভাবক প্রস্তাব দেন, যদি স্কুলে কিছু স্বেচ্ছাসেবী রাখা যায়, যাঁদের অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গে তাঁর কথায় মাথা নাড়েন। জানান, স্কুলের শিক্ষককদেরই অস্ত্র রাখার অনুমতি দেওয়া উচিত, যাতে কেউ হামলা করতে এলে তাকে থামানো যায়। আমেরিকার স্কুলগুলি ও তার আশপাশের কিছুটা অঞ্চল অস্ত্র-মুক্ত এলাকা। কিন্তু ট্রাম্পের মতে, এই সিদ্ধান্ত ‘হাস্যকর’। ট্রাম্পের এই প্রস্তাবের প্রবল বিরোধিতা করেছেন অনেকেই। কানেক্টিকাটের ডেমোক্র্যাট সেনেটর ক্রিস মার্ফি এক টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, ‘‘এটা একটা বড়সড় বিপর্যয়ের ইঙ্গিত মাত্র।’’