US-Iran Conflict

হুমকির পর ‘সরাসরি আলোচনা’র প্রস্তাব ইরানকে! পরমাণু চুক্তি নিয়ে নাছোড়বান্দা ট্রাম্প

দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে পারমানবিক চুক্তি নিয়ে সুর চড়াতে শুরু করেন। কখনও আলোচনার কথা বলেন, কখনও আবার সরাসরি বোমা মারার হুমকিও দেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ২২:২০
Share:
Donald Trump demands direct talks with Iran on nuclear deal

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

দিন কয়েক আগেই ইরানের উপর বোমা ফেলবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এ বার পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে তাদের ‘সরাসরি আলোচনায়’ বসার প্রস্তাব দিলেন তিনি! শুধু তা-ই নয়, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরান নেতাদের চুক্তি করার জন্য সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

Advertisement

আমেরিকা-সহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ দীর্ঘ দিন ধরেই ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ করে আসছে। যদিও বিষয়টি তেহরান অস্বীকার করছে। ইরানের যুক্তি, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই।

দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেই ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে সুর চড়াতে শুরু করেন। কখনও আলোচনার কথা বলেন, কখনও আবার সরাসরি বোমা ফেলার হুমকিও দেন। এই আবহে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমি মনে করি, আমাদের (ইরান এবং আমেরিকা) মধ্যে সরাসরি আলোচনা হলে ভাল হয়।’’ শুধু তা-ই নয়, বিষয়টি দ্রুত সম্পন্ন হওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি। এ ব্যাপারে মধ্যস্থতাকারীদের উপস্থিতি চান না ট্রাম্প।

Advertisement

নতুন পরমাণু চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য ইরানকে দু’মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন ট্রাম্প। চলতি মাসের গোড়ায় হোয়াইট হাউস থেকে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইকে এ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ট্রাম্পের সেই ‘হুমকি চিঠি’র জবাবে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েকশিয়ানের সরকার জানিয়েছিল, তেহরান সম্পর্কে কিছু ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন অবস্থান না-বদলালে সরাসরি আলোচনায় বসা সম্ভব নয়।

তার পরই ট্রাম্পের কণ্ঠে শোনা যায় বোমা হামলার হুমকি। গত রবিবার তিনি জানান, চুক্তিতে ইরান যদি শেষ পর্যন্ত সম্মত না-হয়, তবে আমেরিকা বোমা হামলা শুরু করবে। ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি ভালভাবে নেয়নি তেহরানও। খামেনেই পাল্টা বলেন, ‘‘আমেরিকা আমাদের উপর একটাও বোমা ফেললে তার পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর।’’ সূত্রের খবর, আমেরিকা হামলা করলে তার জবাব দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করা শুরু করেছে। সেই আবহেই ট্রাম্প ফের একবার তেহরানকে আলোচনার টেবিলে বসার আহ্বান জানালেন। তবে এ ব্যাপারে ইরানের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

ঘটনাচক্রে, ট্রাম্পের আগের মেয়াদে ওয়াশিংটনই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বাতিল করেছিল! ২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল আমেরিকা-সহ ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি এবং চিন। চুক্তির নাম ছিল ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ)। তাতে স্থির হয়, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি বন্ধ রাখলে তেহরানের উপর বসানো আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা এবং অন্য কয়েকটি দেশ। এতে উভয়পক্ষই লাভবান হয়েছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে প্রথম বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ওই পরমাণু চুক্তি ওবামার ভুল পদক্ষেপ। এর ফলে আমেরিকার কোনও সুবিধা হয়নি। উল্টে লাভ হয়েছে ইরানের। ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে ফেরার পর আবার কঠোর অবস্থান নেওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement