বন্যায় বিধ্বস্ত পাকিস্তান।
সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে পাকিস্তানের বন্যায় মৃতদের স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেছিলেন। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে এই আশাপ্রকাশ করেছিলেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ অবশ্য কিছুদিন আগেই বন্যাদুর্গত পাকিস্তানের পাশে না দাঁড়ানোর জন্য ভারতের সমালোচনা করেছেন। ভারতের কাশ্মীর নীতি নিয়েও সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে শাহবাজকে। তবে এর মধ্যে তাঁর ঘরোয়া রাজনীতির বাধ্যবাধকতাই দেখছেন অনেকে। কারণ, ভারতের কোনও মহল থেকেই এখনও পাকিস্তানকে সাহায্য করার বিষয়ে কোনওরকম দাবি করা হয়নি। কিন্তু বাস্তবতাকে স্বীকার করেই যে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছ থেকে খাদ্য আমদানিতে ছাড়পত্র দিতে চলেছে পাকিস্তান, শাহবাজের মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য, অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইলের কথা থেকেই তা স্পষ্ট।
পাকিস্তানের ভয়াবহ বন্যায় ইতিমধ্যেই ১১০০ মানুষ মারা গিয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে ১৬০ মিলিয়ন ডলার অর্থসাহায্য করা হয়েছে। এমনিতেই চিনের ঋণের জালে জর্জরিত পাকিস্তান অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগছে। তার উপর এই বন্যার ফলে দেশে যেমন খাদ্যদ্রব্যের আকাল দেখা দিয়েছে, তেমনই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মূল্যবৃদ্ধি, কালোবাজারি। এই পরিস্থিতিতেই ভারত থেকে চাল, শাকসব্জি আমদানির দিকে জোর দিতে চাইছে পাকিস্তান।
প্রবল বন্যায় ডুবে গিয়েছে দেশের এক-তৃতীয়াংশ জনপদ। অধিকাংশ কৃষিজমি জলের তলায় চলে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে খাদ্যসঙ্কটও। এই পরিস্থিতিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছ থেকে খাদ্যবস্তু আমদানি সংক্রান্ত নীতি শিথিল করার পরিকল্পনা করেছে পাকিস্তান সরকার। এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল জানান, বিশ্বের একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বন্যাদুর্গতদের স্বার্থে খাদ্যবস্তু আমদানি করার জন্য তাঁদের কাছে অনুরোধ করেন। সব দিক বিবেচনা করেই তাঁরা ভারত থেকে খাদ্যবস্তু আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে পঠানকোটে বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গিহানার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে কথাবার্তা প্রায় বন্ধ রয়েছে। সীমান্তের দুই পারে বাণিজ্যও প্রায় বন্ধ রয়েছে। কিন্তু দেশের বন্যা বিপর্যস্ত মানুষদের জন্য ভারত থেকে খাদ্য আমদানিতে সবুজ সংকেত দিতে চলেছে পাকিস্তানের শাহবাজ শরিফের সরকার।