International News

বোতল থেকে দৈত্য বেরিয়ে পড়ল: ইমরান

দিল্লির হিংসার আঁচ যেন পাকিস্তানে না-লাগে সে ব্যাপারেও নিজের দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়েছেন ইমরান।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৫৮
Share:

ছবি: রয়টার্স।

দিল্লিতে চার দিন ধরে চলা অশান্তি নিয়ে ভারতকে খোঁচা দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

Advertisement

দিল্লিতে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন জানিয়ে বুধবার সকালে টুইট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার কিছু ক্ষণ পরেই ইমরানের এই টুইট-খোঁচা। পর পর টুইট করে পাক প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ভারতে যে এমন ঘটনা ঘটবে, তার পূর্বাভাস তিনি দিয়েছিলেন গত বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনেই। একই সঙ্গে ইমরান জানিয়েছেন, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপরে নিপীড়ন কোনও অবস্থাতেই তাঁর সরকার বরদাস্ত করবে না।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী এবং সিএএ-পন্থীদের সংঘর্ষে দিল্লিতে যে অশান্তির সূত্রপাত, তা গোষ্ঠী-হিংসায় পরিণত হয়েছে। চার দিন ধরে জ্বলতে থাকা দিল্লির একাংশে রক্তপাত ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেই চলেছে। আজ তা নিয়েই সরব হলেন ইমরান। তাঁর অভিযোগ, হিংসার সূত্রপাত হয়েছিল গত বছর জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর থেকেই। নিজের টুইটার হ্যান্ডলে ইমরান লিখেছেন, ‘‘ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের ঘটনার পরেই গত বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে বলেছিলাম, বোতল থেকে দৈত্যটা বেরিয়ে পড়ল। এ বার রক্তপাত আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাসও দিয়েছিলাম। শুরু হয়েছিল কাশ্মীরে। আর এখন ভারতে থাকা ২০ কোটি মুসলিমকে লক্ষ্য করা হচ্ছে।’’ পাক প্রধানমন্ত্রীর আর্জি, ‘‘এই ধরনের ঘটনা রুখতে গোটা বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: রাজধানী যখন জ্বলছে, পুলিশ তখন আব্বুলিশ!

দিল্লির হিংসার আঁচ যেন পাকিস্তানে না-লাগে সে ব্যাপারেও নিজের দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়েছেন ইমরান। তাঁর হুঁশিয়ারি, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে তা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। পাক প্রধানমন্ত্রীর টুইট, ‘‘সকলকে সতর্ক করে বলতে চাই, পাকিস্তানে যাঁরা অ-মুসলিমদের আক্রমণ এবং তাঁদের ধর্মস্থলের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, তাদের (হামলাকারী) বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের সংখ্যালঘুরাও এ দেশে নাগরিকত্বের সমান অধিকার পান।’’

দিল্লিতে কেন এই ধরনের হিংসা, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। এই হিংসার জন্য রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-কে নিশানা করেছেন তিনি।

টুইটারে ইমরান লিখেছেন, ‘‘নাৎসি ভাবধারায় অনুপ্রাণিত আরএসএসের লোকজন পরমাণু শক্তিধারী একটি রাষ্ট্রের ১০০ কোটি মানুষকে শাসন করছে। যখনই জাতিবিদ্বেষমূলক মতাদর্শ কোনও রাষ্ট্রে ক্ষমতায় আসে, তখনই রক্তপাত হয়।’’ ইমরান যে এই প্রথম আরএসএসের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তা নয়।

অতীতে সঙ্ঘ পরিবারকে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের নেতারা চাইছেন ভারতের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকার জনবিন্যাস পরিবর্তন করতে। তাই সিএএ-র মতো আইন আনা হয়েছে।

পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির বিরোধী দলনেতা শাহবাজ শরিফও দিল্লি-হিংসার সমালোচনা করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘‘দিল্লিতে মোদী গুজরাতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করছেন। আন্তর্জাতিক মহলের দেখা উচিত মুসলিমদের এবং তাঁদের ধর্মস্থলের উপর কী ভাবে হামলার ঘটনা ঘটছে।’’ শাহবাজের দাবি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিল্লির হিংসার ঘটনার নিন্দা করা উচিত ছিল।

মঙ্গলবার পাক মানবাধিকার মন্ত্রী শিরিন মাজ়ারি দাবি করেন, ভারত কাশ্মীরের মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেই চলেছে। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের সময় থেকে নেওয়া সব পদক্ষেপ খারিজ করার দাবি করেন তিনি। বুধবার জেনিভায় রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে বিদেশ মন্ত্রকের সচিব (পশ্চিম) বিকাশ স্বরূপ বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবেই থাকবে। পাকিস্তান হল সন্ত্রাসের উৎস। যে সব রাষ্ট্র সন্ত্রাসে মদত দেয় তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement