খেল্ দেখাচ্ছে মাংখুট, বলি ৬৬

হারিকেন ফ্লোরেন্স যখন একটু একটু করে পিছু হটছে আমেরিকায়, তখন ঘূর্ণিঝড় মাংখুটের দাপটে বিধ্বস্ত হংকং, ফিলিপিন্স আর চিনের মূল ভূখণ্ড।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

হংকং শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২৮
Share:

মরিয়া: বাঁচার চেষ্টা। ফিলিপিন্সের লুজ়ন দ্বীপের কাছে বুলাকান প্রদেশে। ছবি: এএফপি।

হারিকেন ফ্লোরেন্স যখন একটু একটু করে পিছু হটছে আমেরিকায়, তখন ঘূর্ণিঝড় মাংখুটের দাপটে বিধ্বস্ত হংকং, ফিলিপিন্স আর চিনের মূল ভূখণ্ড। ইতিমধ্যেই ফিলিপিন্সে এই ঝড়ের বলি অন্তত ৬৪ জন। এ বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী এই ঝড় ফিলিপিন্স থেকে চিনের মূল ভূখণ্ডের দিকে ধ্বংসাত্মক পথ তৈরি করে এগিয়ে যাচ্ছে। মাংখুটে পর্যুদস্ত হংকং রবিবার সকাল থেকেই এক রকম থমকে গিয়েছে।

Advertisement

ঘণ্টায় ১৭৩ কিলোমিটার বেগে ভয়ঙ্কর ঝোড়ো হাওয়ায় বাড়িঘর থেকে ছাদ ধসে পড়ছে, গুড়িয়ে যাচ্ছে জানলা, উপড়ে গিয়েছে অসংখ্য গাছ। বৃষ্টিতে ধসের প্রকোপও মারাত্মক। ঘূর্ণিঝড়ের চোখ আজ বিকেলে ছুঁয়ে গিয়েছে হংকংয়ের দক্ষিণ অংশ। চিনের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণে গুয়াংডং প্রদেশে জিয়াংমেন শহরে স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটা নাগাদ এটি আছড়ে পড়েছে। গুয়াংডংয়ে দু’জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এই প্রদেশে জনবসতি সবচেয়ে বেশি। ইতিমধ্যেই ২৫ লক্ষ লোককে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হংকং সীমান্তে প্রযুক্তি-হাব শেনঝেন ও পর্যটকপ্রিয় দ্বীপ হাইন্যান থেকে সব উড়়ান বাতিল করা হয়েছে। মাংখুট এখন পশ্চিম গুয়াংডংয়ের দিকে পাড়ি দিচ্ছে। আছড়ে পড়ার পরে তার শক্তি কিছুটা কমেছে।

গত ৬০ বছরের ইতিহাসে এই নিয়ে ১৫ বার এমন ভয়াবহ ঝড়ের সাক্ষী হংকং। ঝড়ের চোটে এখানকার দক্ষিণ উপকূলে ম্যাকাউয়ে জুয়ার আসর পুরোপুরি বন্ধ। গত বছর সুপার টাইফুন হাতোর প্রভাবে মারাত্মক ক্ষতি হয় ক্যাসিনো সাম্রাজ্যে। এ বার তাই আগে থেকেই বন্ধ করা হয়েছে সব। এখানকার জনপ্রিয় ভিক্টোরিয়া বন্দরেও ঝড়ের অভিঘাতে জলস্তর ১২.৮ ফুট ছুঁয়েছে। হংকং, শেনঝেন, গুয়াংঝৌয়ের সব বিমানবন্দর মিলিয়ে ৫৫০টি উড়ান বাতিল করা হয়েছে। জলস্রোত একটু একটু করে বাড়ছে বেশ কিছু বহুতলের নীচে। এখনই বৃষ্টি কমার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানাচ্ছেন আবহবিদেরা।

Advertisement

গত কাল ফিলিপিন্সে সব চেয়ে বেশি দাপট দেখিয়েছে সে। এখানকার উত্তরের লুজ়ন দ্বীপ এলাকায় ছোট শহর এবং গ্রামের দিকে বাড়িঘর মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে মাংখুট। বেশির ভাগ লোক চাপা পড়েছে ধসে। ৫১ জায়গায় ধস নেমেছিল। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। ক্ষতিগ্রস্ত ২ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ। ফিলিপিন্সে মাংখুটের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৭০ কিলোমিটার।

বছর পাঁচেক আগে ঘূর্ণিঝড় ইয়োলান্ডার দাপটে এখানে মারা যান ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। আশ্রয় হারান ৪০ লক্ষ। ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের বিধ্বংসী চেহারাটা তাই অনেকটাই চেনা ফিলিপিন্সের। তবুও এ বার এড়ানো যায়নি মৃত্যু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement