—প্রতীকী চিত্র।
প্রতিষেধকের মাধ্যমে কোভিড-১৯ সারানো সম্ভব কি না, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজ়িস (এনআইএআইডি)-এর ডিরেক্টর অ্যান্টনি ফাউচি সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন। সেই লক্ষ্য পূরণ করতে এ বার জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিল দেশের ৩ ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা মডার্না আইএনসি, জনসন অ্যান্ড জনসন এবং ফাইজার আইএনসি। খুব শীঘ্রই তাদের তৈরি সম্ভাব্য করোনা টিকা বাজারে আসতে চলেছে বলে বিবৃতি জারি করেছে মডার্না। অল্পবয়সিদের উপর প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করতে চলেছে জনসন অ্যান্ড জনসনও। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করার পথে ফাইজার।
এই মুহূর্তে শেষ পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাচ্ছে মডার্না আইনএনসসি। মোট ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাচ্ছে তারা। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৬৫০ জনের উপর তাদের তৈরি এমআরএনএ-১২৭৩ প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে। এই স্বেচ্ছাসেবকেদর মধ্যে ৩৭ শতাংশ বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষ বলে জানা গিয়েছে। তাদের মধ্যে ৪২ শতাংশ আবার কোনও না কোনও গুরুতর অসুখে ভুগছেন।
মডার্নার যুক্তি, জেনেশুনেই কোমর্বিডিটি রয়েছে এমন স্বেচ্ছাসেবকদের বেছে নিয়েছে তারা। কারণ কোমর্বিডিটি থাকা সত্ত্বেও যদি তাদের তৈরি প্রতিষেধক কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়, সে ক্ষেত্রে জরুরি ভাবে টিকা প্রয়োগের অনুমোদন জোগাড় করা আরও সহজ হবে। এখনও পর্যন্ত তাদের তৈরি প্রতিষেধক ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। যে কারণে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পূর্ণ না হলেও, ইতিমধ্যেই অগ্রিম ১১০ কোটি ডলারের অর্ডার পেয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছে মডার্না।
আরও পড়ুন: টিকাকরণের প্রস্তুতি শুরু, রাজ্যগুলিকে চিঠি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের, কমিটি গড়ার নির্দেশ
পিছিয়ে নেই জনসন অ্যান্ড জনসনও। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এর আগে শিশু এবং কিশোরদের উপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালিয়ে প্রতিষেধক তৈরিতে সাফল্য পেয়েছিল জনসন অ্যান্ড জনসন। এ বারও একই পথে হাঁটতে চলেছে তারা। তার জন্য নিজেদের তৈরি সম্ভাব্য করোনা টিকা ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের উপর পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে গোটা প্রক্রিয়াটা যাতে নিরাপদে চালানো যায়, তার জন্য নিয়ামক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে তাদের। শিশু চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণেই এই ট্রায়াল চালানো হবে।
তবে জনসন অ্যান্ড জনসন যেখানে ট্রায়াল শুরু করার পথে, সেখানে ইতিমধ্যেই অল্পবয়সিদের উপর সম্ভাব্য প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করে দিয়েছে আমেরিকার আর এক সংস্থা ফাইজার আইএনসি। জার্মান সংস্থা বায়োএনটেক-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ১২ বছর বয়সিদের নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে তারা। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মডার্না এবং ফাইজারের চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল সামনে এসে যাবে বলে জানিয়েছেন ফাউচি।
আরও পড়ুন: কমল ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিতের সংখ্যা, দেশে মোট সংক্রমণ ছাড়াল ৮১ লক্ষ
প্রতিষেধক তৈরি এবং মজুত রাখা নিয়ে সব রকম ভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত বলে দেশ বিদেশের সংস্থাগুলিকে ইতিমধ্যেই বার্তা দিয়েছে ভারত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে ইতিমধ্যে টিকাকরণের প্রস্তুতিও শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ত্রি-স্তরীয় কমিটির নজরদারিতে টিকাকরণ প্রক্রিয়া চলবে বলে জানানো হয়েছে।