শনিবার ওয়াল্টার রিড মেডিক্যাল সেন্টারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
করোনা হানায় বিপর্যস্ত গোটা দেশ। প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুসংখ্যা। তা সত্ত্বেও এত দিন নির্বিকার ছিলেন তিনি। মহামারি পরিস্থিতির জন্য লাগাতার চিনকে আক্রমণ করে এলেও, নিজে মাস্ক পরার তাগিদ দেখাননি। কিন্তু শেষমেশ এ বার মাস্ক পরতেই হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। তবে শুধুমাত্র বিশেষ কিছু জায়গাতেই তিনি মাস্ক পরার পক্ষপাতী বলেও সাফ জানিয়ে দেন ট্রাম্প।
জানুয়ারির শেষ দিকে মার্কিন মুলুকে নোভেল করোনা হানা দেয়। গত ৩ এপ্রিল সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তরফে মাস্ক পরে তবেই বাড়ির বাইরে পা রাখার আর্জি জানানো হয়। তার পর থেকে গত তিন মাসে বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী প্রচারে গেলেও মাস্ক পরার প্রয়োজন অনুভব করেননি ট্রাম্প। সভায় ভিড় জড়ো করতে সামাজিক দূরত্ব বিধিরও তোয়াক্কা করেননি তাঁর প্রচারের দায়িত্বে থাকা লোকজন।
কিন্তু শনিবার মুখে মাস্ক পরেই ওয়াল্টার রিড মেডিক্যাল সেন্টারে আহত সেনাকর্মীদের দেখতে যান তিনি। প্রেসিডেন্টের জন্য তৈরি গাঢ় নীল রঙের একটি বিশেষ মাস্ক পরেছিলেন তিনি। এত দিন পর হঠাৎ এই মত পাল্টালেন কেন জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমি কোনও দিনই মাস্কের বিরোধিতা করিনি। তবে আমার বিশ্বাস, জায়গা ও সময় বুঝেই মাস্ক পরা উচিত। হাসপাতালে গেলে মাস্ক পরেই যাওয়া উচিত।’’
আরও পড়ুন: চিনের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে না-ও দাঁড়াতে পারে আমেরিকা, সন্দিহান বোল্টন
রবিবার সকাল পর্যন্ত মার্কিন মুলুকে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এসে ঠেকেছে ৩২ লক্ষ ৪৭ হাজার ৭৮২-তে। কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৮১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে। তাঁর সহযোগীদের মধ্যে কয়েক জন তো বটেই, ছেলে ডোনাল্ড জুনিয়রের প্রেমিকা কিম্বারলিও সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হন। তা সত্ত্বেও এত দিন দিন মাস্ক পরেননি ট্রাম্প। এমনকি মাস্ক পরে বাইরে বেরনোয় প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনকে টুইটারে কটাক্ষও করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভারত-আমেরিকার এই সম্পর্ক গড়ে উঠতে ছ’দশক লেগেছে: জয়শঙ্কর
তাই হঠাৎ কী এমন ঘটল যাতে ট্রাম্পকে মাস্ক পরতে হল, এই প্রশ্নই এখন মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া নিয়ে শুরু থেকেই সমালোচনার মুখে পড়েছে ট্রাম্প সরকার। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের মাস্ক না পরাকে দায়িত্বজ্ঞানহীনতা হিসেবেই দেখছেন দেশের মানুষ। নভেম্বরের নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়তে পারে। সেই আশঙ্কা থেকে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্বে থাকা সংস্থা এবং সহযোগীরা মিলে তাঁকে মাস্ক পরতে রাজি করিয়েছেন।