দক্ষিণ আমেরিকার পাশাপাশি জ্বলছে আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অংশও। ধরা পড়েছে নাসার উপগ্রহচিত্রে।
আমাজনের বৃষ্টি বনানীকে দাবানল থেকে রক্ষা করতে গোটা বিশ্ব যখন একজোট হচ্ছে, ঠিক তখনই নাসার উপগ্রহচিত্র ধরা পড়েছে আফ্রিকার দক্ষিণ অংশ জুড়ে একই রকম ভয়াল আগুনের ছবি। কঙ্গো অববাহিকায় ১০ লক্ষ বর্গমাইলেরও বেশি এলাকা এখন দাবানলের গ্রাসে। আমাজনের পরে এই এলাকাকেই বলা হয় ‘পৃথিবীর দ্বিতীয় ফুসফুস’। সে ফুসফুসও এ বার বিপন্ন।
গোটা পৃথিবীর পরিবেশবিদদের তরফে চাপ তৈরি হওয়ার জি-৭ ভুক্ত দেশগুলি আমাজনকে বাঁচাতে তৎপর হলেও আফ্রিকার কথা এখনও সে ভাবে শিরোনামে আসেনি। তবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ জি-৭ বৈঠকে গত কাল এক বার উল্লেখ করেছিলেন যে, সাহারা মরুভূমি সংলগ্ন এলাকাতেও জঙ্গল জ্বলছে। এর পরে মাকরঁ জানিয়েছিলেন, ব্রাজিল নিয়ে ঐকমত্য তৈরি হওয়ার পরে এ বিষয়টা নিয়েও তাঁরা ভাবনাচিন্তা করবেন।
কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, গ্যাবন, কঙ্গো, ক্যামেরুন এবং ম্যাডাগাস্কার জুড়ে বিস্তৃত আফ্রিকার এই অরণ্য। গত সপ্তাহে কঙ্গো ও অ্যাঙ্গোলায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্রাজিলের চেয়েও ভয়াল আগুন দাপট দেখিয়েছে বলে দাবি। কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মী ও দূত টোসি এমপানু বলেছেন, ‘‘আফ্রিকা আর ব্রাজিলের আগুন একই কারণে তৈরি হয়নি। আমাজনে হয়তো খরা ও জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে বৃষ্টি বনানীর এই অবস্থা। তবে মধ্য আফ্রিকা কিন্তু জ্বলছে মূলত ভ্রান্ত কৃষি পদ্ধতির কারণে।’’
কঙ্গোয় জঙ্গল পরিষ্কারের জন্য ঝুম পদ্ধতিতে চাষ হয়। কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে মাত্র ৯% মানুষ বিদ্যুতের সুবিধা পান। তাই বেশির ভাগ মানুষ কাঠ জ্বালিয়ে রান্নাবান্না ও অন্য কাজ করেন। গ্যাবন ও কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের কিছু অংশে অরণ্য-নিধন চলছে ব্যাপক হারে। খনিজ ও তৈল প্রকল্পের জেরেও ক্ষতি হচ্ছে অরণ্যের। তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকে এখনই আফ্রিকার সঙ্গে আমাজনের তুলনা টানতে চাইছেন না।