China-Taiwan Conflict

সিকিম সীমান্তের কাছেই মোতায়েন চিনা যুদ্ধবিমান

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, জে-২০ অত্যন্ত আধুনিক যুদ্ধবিমান। সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২৪৬৮ কিলোমিটার। এগুলো বিশেষ ধরনের ‘স্টেলথ’ যুদ্ধবিমান, অর্থাৎ খুব শক্তিশালী রেডার ছাড়া এগুলি ধরা পড়ে না।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৪ ০৮:৩৬
Share:

তাইওয়ানের আকাশসীমায় চিনা যুদ্ধবিমান। ছবি: রয়টার্স।

সীমান্ত থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে চিনা যুদ্ধবিমান! উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ল তার ছবি। সম্প্রতি একটি বেসরকারি ভূ-রাজনীতি বিশ্লেষক সংস্থা প্রকাশ করেছে সেটি। সংস্থার দাবি, সিকিম সীমান্ত থেকে অন্তত ১৫০ কিলোমিটার দূরে চিন অধিকৃত তিব্বতের শিগাৎসে বিমানবন্দরে ছ’টি অত্যাধুনিক জে-২০ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে চিন। শিগাৎসে তিব্বতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। গত ২৭ মে থেকে সেখানে যুদ্ধবিমানগুলিকে দেখা গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারা সেনাঘাঁটি থেকে যে বিমানবন্দরের দূরত্ব ২৯০ কিলোমিটারেরও কম। প্রসঙ্গত, হাসিমারাতেই রয়েছে ভারতের দ্বিতীয় রাফাল বিমানঘাঁটি।

Advertisement

দেশে এই মুহূর্তে চলছে লোকসভা নির্বাচন। আগামী ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল। তার আগে হঠাৎ করে চিনের এই পদক্ষেপে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। যদিও, বিদেশ মন্ত্রক এখনও এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে, তারা যে বিষয়টি জানে তা স্পষ্ট। চিনের ওই বিমানবন্দরে সারা বছর জে-২০ যুদ্ধবিমান মোতায়েন থাকে না। শিগাৎসে বিমানবন্দরটির উচ্চতা ১২ হাজার ৪০৮ ফিট। বায়ুসেনা ঘাঁটির পাশাপাশি অসামরিক ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়। সারা বছর জে-১০ যুদ্ধবিমান ও কেজে-৫০০ বিমান রাখা থাকে সেখানে। তবে, জে-২০ যুদ্ধবিমান এই প্রথম। সেখানে একটি ওয়াই-২০ মালবাহী বিমানও দেখা গিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেনাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ওই বিমানের মাধ্যমেই সরবরাহ করা হয়।

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, জে-২০ অত্যন্ত আধুনিক যুদ্ধবিমান। সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২৪৬৮ কিলোমিটার। এগুলো বিশেষ ধরনের ‘স্টেলথ’ যুদ্ধবিমান, অর্থাৎ খুব শক্তিশালী রেডার ছাড়া এগুলি ধরা পড়ে না। সচরাচর চিনের পূর্বাংশে এগুলি মোতায়েন থাকে। হঠাৎ করে ভারত সীমান্তের এত কাছে ছ’টি এই বিমান মোতায়েন করার কারণ নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এর আগেও ২০২০ ও ২০২৩ সালে শিনজিয়াং-এ দেখা গিয়েছিল এই বিমান। তবে, এত বেশি পরিমাণে আগে মোতায়েন হয়নি। কূটনীতিকদের একাংশের দাবি, সম্ভবত ২৫০টির বেশি যুদ্ধবিমান ভারত সীমান্তের কাছে মোতায়েন করা হয়েছে। রেডারে ধরা পড়ছে না।

Advertisement

এই যুদ্ধবিমানগুলির সহায়তাতেই চিন চোরাগোপ্তা হানায় পারদর্শী হয়ে উঠেছে। জে-২০তে রয়েছে একাধিক সেন্সর। এমনকি, চিনের উন্নততম ক্ষেপণাস্ত্র (এয়ার টু এয়ার মিসাইল) বহন করতে পারে এই বিমান। তার মধ্যে রয়েছে পিএল-১৫ দীর্ঘতম রেঞ্জেন ক্ষেপণাস্ত্র, যা ৩০০ কিলোমিটার দূরেও আঘাত হানতে পারে। জে-২০ যুদ্ধবিমান রুখতে ভারতের ভরসা এখন রাফাল। ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান রয়েছে ভারতের, তার মধ্যে আটটি এখন আলাস্কায় আমেরিকার সঙ্গে মহড়া দিচ্ছে। আরও ২৬টি রাফাল কেনার জন্য ফ্রান্সের সঙ্গে কথা চালাচ্ছে ভারত। হাসিমারায় ভারতের ১৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান মোতায়েন রয়েছে।

লোকসভা নির্বাচনের আবহে চিনের এই নীরব পদক্ষেপ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, খুব ধীর গতিতে ভারতকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরতে চাইছে চিন। গত পাঁচ বছরে তিব্বত-সহ ভারতের কাছাকাছি এলাকাগুলিতে নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছে সে দেশ। গড়ে তুলছে নতুন বায়ুসেনা ঘাঁটি। উন্নত করছে পুরনো ঘাঁটিগুলিও। নিয়মিত যুদ্ধবিমানের পরীক্ষাও চলছে।

এমনিতেই ২০২০ সালে গলওয়ান সংঘর্ষ, ২০২২ সালে তাওয়াংয়ের কাছে প্রকৃত সীমান্ত রেখার কাছে ফের ভারত-চিনের সংঘাত ও এখন সিকিম সীমান্তের কাছে চিনা যুদ্ধবিমান মোতায়েন— ক্রমশ বাড়ছে টানাপড়েন! কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বিরোধীদের দাবি, ভারতের শত্রু হিসেবে বার বার পাকিস্তানের নাম করলেও চিন নিয়ে কেন্দ্রকে সেরকম কিছু বলতে দেখা যায় না। এ বারেও বিদেশ মন্ত্রকের নীরবতায় বেড়েছে অস্বস্তি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement