ছবি: সংগৃহীত।
ফের চমক! চিনের একদল বিজ্ঞানী দাবি করলেন, করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের জন্ম হয়েছে ইঁদুরের দেহে। তাঁরা গবেষণাপত্রে জোরদার তথ্যপ্রমাণ-সহ জানিয়েছেন, মানুষের দেহ থেকে ইঁদুরের দেহে প্রবেশ করেছিল ভাইরাসটি। তার পর সেখান থেকে ফের মানবদেহে সংক্রমিত হয়। কিন্তু এর মাঝে তার মধ্যে ঘটে যায় একাধিক মিউটেশন।
করোনাভাইরাসের অন্যান্য ভেরিয়েন্টের থেকে ওমিক্রনের চরিত্র বেশ অন্য রকম। গোড়া থেকেই সেটা স্পষ্ট। এর মারণ ক্ষমতা কম হলেও সংক্রমণ ক্ষমতা মারাত্মক। ইতিমধ্যেই ওমিক্রনের একাধিক সাব-ভেরিয়েন্টও পাওয়া গিয়েছে। এমন এমন মিউটেশন দেখা গিয়েছে ওমিক্রনে, যা আগে কোনও নমুনায় মেলেনি। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ওমিক্রনে এমন পাঁচটি মিউটেশন দেখা গিয়েছে, যা ইঁদুরের ফুসফুসে পাওয়া ভাইরাসের নমুনার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। এই গবেষণাটি করেছেন তিয়ানজিনের নানকাই বিশ্ববিদ্যালয় এবং ‘দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা। ‘বায়োসেফটি অ্যান্ড বায়োসিকিয়োরিটি’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি।
ওমিক্রনে এখনও পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি মিউটেশন ঘটতে দেখা গিয়েছে। যার মধ্যে বেশির ভাগই অন্যান্য স্ট্রেনে মেলেনি। ওমিক্রনের জন্ম নিয়ে নানা মত রয়েছে। মূলত তিনটি তত্ত্ব শোনা গিয়েছে। একটিতে বলা হয়েছে, কোনও ইমিউনোকমপ্রোমাইজ়ড (সম্ভবত এডস রোগী) ব্যক্তির দেহে ওমিক্রন তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয় তত্ত্বে বলা হয়েছে, কোভিড রোগীদের শরীরেই সকলের অলক্ষে মিউটেশন ঘটে এটি তৈরি হয়েছে। যদিও বেশির ভাগ গবেষণায় এই থিয়োরিটিকে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় তত্ত্বে দাবি করা হয়েছে, মানুষের দেহে সংক্রমণকারী কোনও করোনা স্ট্রেন প্রাণিদেহে ঢুকে কয়েক দফায় মিউটেশন ঘটিয়ে ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট তৈরি করেছে। চিনেরই কিছু বিজ্ঞানী আবার জানিয়েছেন, তাঁরা একটি কৃত্রিম অ্যান্টিবডি আবিষ্কার করেছেন, যা কি না রুখে দিতে পারে সার্স-কোভ-২-র ওমিক্রন ভেরিয়েন্টকে।
সাংহাইয়ের ফিউডান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তারা সম্ভবত কৃত্রিম অ্যান্টিবডি তৈরির একটি ‘রন্ধন-প্রণালী’ খুঁজে পেয়েছেন। যা ওমিক্রনকে রুখতে পারবে। অন্য একটি রোগ নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে তাঁরা বিষয়টির সন্ধান পান বলে জানিয়েছেন, প্রধান বিজ্ঞানী হুয়াং জিংগে। ‘বায়োআরএক্সআইভি’-এর প্রিপ্রিন্ট ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি। তিনি জানিয়েছেন, আচমকাই তাঁরা অ্যান্টিবডিটি তৈরি করে ফেলেন। করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়তে গিয়ে মানুষের ইমিউনিটি সিস্টেম দু’টি অ্যান্টিবডি তৈরি করে।