ভারত নয়, চিনের নিশানায় এখন শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
আর রাখঢাক নয়। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম এ বার খোলাখুলি আক্রমণ করতে শুরু করল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। চিনের কমিউনিস্ট সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসে লেখা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদী ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেছেন এবং প্রত্যাশিত ভাবেই কট্টরবাদী সুর নিয়ে বিদ্বেষ বাড়িয়ে তুলছেন। বালুচিস্তান নিয়েও নরেন্দ্র মোদী বেনজির প্ররোচনা দিচ্ছেন বলে গ্লোবাল টাইমসে লেখা হয়েছে।
এই প্রথম চিনের সরকারি মিডিয়া বালুচিস্তান প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্য সম্পর্কে কোনও মত প্রকাশ করল। বালুচিস্তান প্রসঙ্গে মোদী তথা ভারত সরকারের যে অবস্থান, সে প্রসঙ্গে চিনা কূটনীতিকরা গত কয়েক দিন ধরে ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করছিলেন। সেই মতামতেও মোদীর সমালোচনাই ছিল। কিন্তু সরকারি ভাবে এত দিন পর্যন্ত বেজিং মোদীকে বা ভারতকে কোনও প্রত্যক্ষ আক্রমণ করেনি। মঙ্গলবার গ্লোবাল টাইমসে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হল, তাতে চিনা সরকারের অবস্থানে আর কোনও রাখঢাক রইল না। অত্যন্ত কঠোর ভাষায় আক্রমণ করা হল ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে।
গ্লোবাল টাইমসে কী কী লেখা হয়েছে দেখে নেওয়া যাক এক ঝলকে:
ভারতীয় কূটনীতিকরা বলছেন, চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে যে ভাবে আক্রমণ করেছে, তা বেশ বেনজির। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যে সব শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, কূটনৈতিক পরিভাষায় তা অত্যন্ত কঠোর। একটি দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যমে অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য আদ্যন্ত অসৌজন্যমূলক বলেও কূটনৈতিক মহলের মত। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা বলছেন, চাপে পড়েই এই রকম বেনজির অসৌজন্যমূলক আচরণ করছে বেজিং। ৪৬ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করে যে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর গড়ে তুলেছে বেজিং, তা পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালুচিস্তানের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে চিন-পাকিস্তানের এই যৌথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে ভারত আগেই প্রতিবাদ জানিয়েছে। আর বালুচিস্তানে ওই প্রকল্পের বিরোধিতা শুরু করেছেন বালোচরাই। পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালুচিস্তানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ যে ভাবে বাড়ছে, তাতে ওই করিডরের নিরাপত্তা তো বিঘ্নিত হচ্ছেই। তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলের সামনে গণহত্যার দায়েও অভিযুক্ত হতে হচ্ছে চিনকে। লন্ডনে চিনা দূতাবাসের বাইরে সোমবারই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বালোচরা। পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চিন বালুচিস্তানে গণহত্যা চালাচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ। দায় নিজেদের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে এখন আক্রমণাত্মক হওয়াই একমাত্র পথ বেজিং-এর সামনে, বলছে ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন: চিনা দূতাবাস ঘিরে বালোচ বিক্ষোভ, মোদীর জয়ধ্বনি লন্ডনে, অস্বস্তিতে বেজিং