এ বার থেকে চিনের বিবাহিত দম্পতিরা তিনটি করে সন্তান জন্ম দিতে পারবেন।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন কড়া নিয়ম চালু ছিল চিনে। বিশ্বের সব থেরে জনবহুল দেশ অবশেষে সেই নিয়ম শিথিল করার পথে। আজ চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, এ বার থেকে দেশের বিবাহিত দম্পতিরা তিনটি করে সন্তান জন্ম দিতে পারবেন।
চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং সম্প্রতি এক পলিটবুরো বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। চলতি মাসের গোড়ায় প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে— চিনে সন্তান জন্মের হার এখন তলানিতে। গত বছর ১ কোটি ২০ লক্ষ শিশু জন্মেছিল চিনে, ১৯৫০-এর দশকের পর থেকে যা সব চেয়ে কম। সরকারি হিসেব বলছে, প্রতি বিবাহিত মহিলাপিছু বর্তমানে গড়ে ১.৩ জন সন্তান জন্মায় এ দেশে। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে কঠোর জন্ম নিয়ন্ত্রণ নীতি চালু থাকার ফলে দেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ এখন বার্দ্ধক্যের দিকে পা বাড়িয়েছে। অনেকটা জাপান বা ইটালির মতোই। ফলে নতুন প্রজন্মের খোঁজে নীতি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শি চিনফিং সরকার। সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘এই নীতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সরকার এমন কিছু ব্যবস্থা নেবে, যা দেশের জনসংখ্যা পরিকাঠামো উন্নয়নে সাহায্য করবে।’’ তবে সেই ব্যবস্থা ঠিক কী, তা সবিস্তার বলা হয়নি।
১৯৬০-এর দশক থেকে জন্মহার খুব দ্রুত গতিতে বেড়ে চলায় এর আগে চিন অত্যন্ত কড়া ভাবে ‘পরিবার পিছু এক সন্তান’ নীতি মেনে চলত। একের বেশি সন্তান হলেই কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হত চিনা নাগরিকদের। ২০১৬ সালে অতি কঠোর জন্ম নিয়ন্ত্রণ নীতি সামান্য হলেও শিথিল করেছিল সরকার। এক থেকে দুই সন্তান নীতিতে সায় দেওয়া হয় তখন। কিন্তু এখানকার বেশির ভাগ শহরে থাকা-খাওয়ার খরচ এতটাই বেশি যে তখনও সাধারণ মানুষ একের বেশি সন্তান নেওয়ার কথা খুব একটা ভাবতেন না।
এ বারও সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। বেশির ভাগ দম্পতিরই বক্তব্য, তাঁরা চাইলেও তিনটে সন্তান বড় করার সামর্থ্য তাঁদের নেই। চিনা সোশ্যাল মিডিয়া উইবো-তে এক জন লিখেছেন, ‘‘আমিও তিন সন্তান নিতে চাই। কিন্তু তার জন্য বছরে অন্তত ৫০ লক্ষ ইউয়ান লাগবে।’’