India China Relation

‘হাতি নাচুক, ড্রাগন নাচুক একসঙ্গে’! ট্রাম্প আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করতেই নয়াদিল্লিকে ‘বন্ধুত্বের’ আহ্বান বেজিংয়ের

ভারত এবং চিনের শক্তির কথা বলতে গিয়ে ‘হাতি’ এবং ‘ড্রাগন’-এর উপমা ব্যবহার করেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী। জানিয়েছেন, একে অপরের বিরুদ্ধে কথা না-বলে পরস্পরকে সাহায্য করতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৫ ১৬:৪৫
Share:
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। —ফাইল চিত্র।

চিনা পণ্যের উপর শুল্কের পরিমাণ দ্বিগুণ করেছে আমেরিকা। এর মাঝেই ভারতের সঙ্গে একজোট হওয়ার বার্তা দিলেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। তাঁর মতে, গত বছর রাশিয়ায় চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকের পর থেকে ভারত এবং চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি হয়েছে। ক্ষমতার রাজনীতির বিরুদ্ধে এই দুই দেশকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন ওয়াং। আমেরিকার নাম না-করলেও পরোক্ষে ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই বার্তা দিয়েছেন তিনি। ওয়াং জানিয়েছেন, ক্ষমতার রাজনীতি এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দিতে হবে চিন এবং ভারতকে।

Advertisement

ভারত এবং চিনের শক্তির কথা বলতে গিয়ে ‘হাতি’ এবং ‘ড্রাগন’-এর উপমা ব্যবহার করেছেন চিনের বিদেশমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘ড্রাগন এবং হাতির মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ড্রাগন আর হাতিকে একসঙ্গে নাচিয়ে দিতে হবে। একে অপরের বিরুদ্ধে কথা না-বলে পরস্পরকে সাহায্য করতে হবে। তাতেই দুই দেশের ফয়দা। যদি এশিয়ার বৃহত্তম দুই অর্থনীতি একজোট হয়, সমগ্র বিশ্বের পক্ষেই তা লাভজনক।’’

উল্লেখ্য, আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরেই চিনকে কড়া বার্তা দিয়েছেন। চিনের পণ্যের উপর প্রথমে ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছিলেন তিনি। তার পর তা দ্বিগুণ করে দেন। বর্তমানে চিনের পণ্যে আমেরিকা ২০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক নেয়। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ভাল চোখে দেখেননি জিনপিং। চিনের তরফেও কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। বুধবার আমেরিকায় অবস্থিত চিনা দূতাবাস সমাজমাধ্যমে লিখেছে, ‘‘আমেরিকা যদি যুদ্ধই চায়, তা শুল্কযুদ্ধ হোক, বাণিজ্যযুদ্ধ হোক কিংবা অন্য কোনও যুদ্ধ, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে তৈরি আছি।” পরে পেন্টাগন জানায়, তারাও তৈরি আছে। আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে এই বাক্যবিনিময়ের মাঝেই শুক্রবার চিনের বিদেশমন্ত্রী বার্ষিক সাংবাদিক বৈঠক করেন বেজিংয়ে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্ন উঠলে বন্ধুত্বের বার্তা দেন তিনি। জানান, গত এক বছরে ভারত এবং চিনের সম্পর্কের অনেক ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। আগামী দিনে এই দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করলে তার একাধিক ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।

Advertisement

চিনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। ১৯৬২-র যুদ্ধ এবং ১৯৬৭-র সীমান্ত সংঘর্ষের পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) তুলনামূলক শান্ত ছিল। ২০১৭ সাল থেকে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হতে শুরু করে। সে বছর ডোকলামে টানা ৭৩ দিন দু’দেশের বাহিনী পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল। পরে কূটনৈতিক পথে সমস্যার সমাধান হয়। এর পর ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে রক্তাক্ত সংঘর্ষ হয় ভারতীয় সেনার সঙ্গে লালফৌজের। তার পরেও কূটনৈতিক এবং সামরিক স্তরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ফিরেছে। তবে মাঝেমধ্যে অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে কিংবা সিকিম এবং লাদাখের নানা অংশে এলএসি লঙ্ঘনের চেষ্টা করে চিন উত্তাপ বাড়িয়ে গিয়েছে। আমেরিকার সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের আবহে এ বার সেই চিনই ঘনিষ্ঠতার বার্তা দিল ভারতকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement