সিএম১১ ট্যাঙ্ক নিয়ে মহড়া তাইওয়ানের সেনাবাহিনীর। তবে এ ছবি দেশের কোন জায়গায় তোলা, তা প্রকাশ করেনি তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। রয়টার্স
সমুদ্র ও আকাশপথে তাইওয়ানকে ঘিরে ধরে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা ‘অভূতপূর্ব’ ও ‘নজিরবিহীন’ সামরিক মহড়া আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ করার কথা ঘোষণা করল চিন। তবে সেই সঙ্গেই শি জিনপিংয়ের সরকার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল, তাইওয়ান ভূখণ্ডে কোনও ধরনের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্ম’ তারা মেনে নেবে না। এবং প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে গোটা ভূখণ্ড দখল করবে তারা।
আজ তাইওয়ান নিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে চিন। ২০০০ সালের পরে এই প্রথম স্বশাসিত এই ভূখণ্ড নিয়ে কোনও শ্বেতপত্র প্রকাশ করল চিনের সরকার। যেখানে তারা ইঙ্গিত দিয়েছে, প্রয়োজনে তাইওয়ান অধিগ্রহণ করার পরে সেখানে সামরিক বাহিনী পাঠাবে তারা। এর আগে শ্বেতপত্রে চিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, হংকংয়ের মতো তাইওয়ানের ক্ষেত্রেও ‘এক দেশ দুই ব্যবস্থা’ মেনে চলবে তারা। অর্থাৎ কোনও দিন চিনের সঙ্গে তাইওয়ানকে জোড়া হলেও সেখানে স্বশাসিত সরকার থাকবে। এবং চিনের কোনও সামরিক বাহিনী তাওইয়ান ভূখণ্ডে ঢুকবে না। কিন্তু আমেরিকান হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর থেকেই সেই সমীকরণ পুরোপুরি পাল্টে গিয়েছে।
আজ স্পষ্ট ভাবেই ওই শ্বেতপত্রের মাধ্যমে বেজিং জানিয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে পুনর্মিলনে বিশ্বাসী। তবে তাইওয়ানের ভিতরে তৃতীয় পক্ষের কোনও ধরনের উস্কানি বা বিচ্ছিন্নতবাদী আচরণ তারা বরদাস্ত করবে না। তবে চিনের সরকার সেই সঙ্গেই বলেছে, ‘‘প্ররোচনায় আমরা বলপ্রয়োগ পুরোপুরি ত্যাগ করতে পারব না। এবং সব রকম ভাবে প্রত্যাঘাতের জন্য তৈরি থাকব।’’ বেজিংয়ের আরও বক্তব্য, নিজেদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে সব রকম প্রস্তুতি তারা সেরে রাখছে।
তাইওয়ান প্রণালীতে সামরিক মহড়ার আজ আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করলেও চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের তরফে জানানো হয়েছে তাইওয়ান ভূখণ্ড আর তার আশপাশের এলাকায় ভবিষ্যতেও কড়া নজরদারি জারি রাখবে তারা। চলবে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণমূলক কার্যকলাপও।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, তাইওয়ান প্রণালীতে মধ্যরেখা (দু’পক্ষের বিভাজন রেখা) অতিক্রম করে আজও অন্তত ১৭টি চিনা যুদ্ধবিমানকে চক্কর কাটতে দেখা গিয়েছে। তাইওয়ান উপকূলের কাছে দেখা মিলেছে চিনা রণতরীরও। তবে চিনের হুমকির মুখে তারা মাথা নত করবে না বলে আজ ফের বার্তা দিয়েছে তাইওয়ান সরকার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র সান লি-ফাং আজ বলেছেন, ‘‘প্রস্তুতি আমরাও সেরে রাখছি। শত্রু পক্ষের হামলার কথা ভেবে আমরাও সেই মতো উপযুক্ত জায়গায় নিজেদের বাহিনী মোতায়েন করছি।’’