ফাইল চিত্র।
চিন থেকেই করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি— এই তত্ত্ব ঘিরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র দ্বিতীয় দফার তদন্ত প্রস্তাবের আবেদন আজ খারিজ করে দিল চিন।
অতিমারির শুরু থেকেই করোনার উৎপত্তি স্থল হিসেবে চিনের দিকেই আঙুল তুলে আসছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলির একাংশ। দাবি, উহানের এক গবেষণাগার থেকেই ছড়িয়েছে এই মারণ ভাইরাস। এই নিয়ে প্রথম দফার তদন্ত শেষ করেছে হু। চলতি মাসে দ্বিতীয় দফার তদন্তের প্রস্তাব পাঠানো হয় চিনের কাছে। যেখানে স্বচ্ছতার প্রশ্নে উহান শহরের গবেষণাগার এবং বাজারগুলির অডিট করার পরিকল্পনা ছিল হু-র। তবে চিনের ন্যাশনাল হেল্থ কমিশনের উপ-মন্ত্রী জ়েং ইক্সিন বলেন, ‘‘এ ধরনের পরিকল্পনা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি কাণ্ডজ্ঞানহীন তো বটেই, বিজ্ঞান বিরোধীও।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, চিনের গবেষণাগারে নিয়ম লঙ্ঘনের জেরেই করোনা ভাইরাস ‘লিক’ হয়েছে এবং বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে— হু-র প্রস্তাবিত তদন্ত-পরিকল্পনার তালিকায় এই অনুমান দেখে তিনি অবাক হয়ে যান।
জুলাইয়ের গোড়ায় হু প্রধান টেড্রস অ্যাডানাম গেব্রিয়েসাস অবশ্য জানিয়েছিলেন, চিনেই এই ভাইরাসের উৎপত্তি কি না, সেই সংক্রান্ত গবেষণায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার গোড়ার সময়ের পরিসংখ্যান না-পাওয়া যাওয়া একটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সম্পর্কে জ়েং-এর মন্তব্য, ‘‘নিরাপত্তার কারণে সব পরিসংখ্যান প্রকাশ করা যায় না।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘হু-র উচিত চিনের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ দূরে সরিয়ে বিজ্ঞানের নিরিখেই এর বিচার করা।’’
এ দিকে, সংক্রমণের ঊর্ধ্ব গতির মধ্যেও দেশবাসীর জন্য পর্যাপ্ত টিকার জোগান না-করতে পারায় প্রশাসনের তরফ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি আজ বলেন, ‘‘বছরের গোড়াতে যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল সেই পর্যায়ে আমরা পৌঁছতে পারিনি। এর জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’ দেশ জুড়ে দৈনিক দেড় লক্ষের কম মানুষকে টিকা দেওয়া হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায়। বাকি উন্নত দেশগুলির তুলনায় যা সবচেয়ে কম। অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম দুই বড় প্রদেশ নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়ায় দ্রুত গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ। তবে সংক্রমণের বহর সবচেয়ে বেশি দেশের বৃহত্তম প্রদেশ সিডনিতেই। লকডাউন চললেও টিকাকরণ অভিযানের ব্যর্থতাতেই এই পরিস্থিতি বলে দাবি দেশবাসীদের একাংশের।
এ বার করোনা সংক্রমেণের চতুর্থ ঢেউয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে ফ্রান্স। এর মাঝে জারি করা ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট’ পদ্ধতি ঘিরে বিতর্কে জড়িয়েছে দেশের প্রশাসন। সেই নিয়ম অনুযায়ী, সিনেমা হল, জাদুঘর এবং ময়দানে যেতে হলে কোভিড-১৯ টিকার সম্পূর্ণ ডোজ়ের শংসাপত্র বা নেগেটিভ পরীক্ষার রিপোর্ট সঙ্গে রাখতে হবে। ৫০ জনের বেশি জমায়েতের ক্ষেত্রেও বলবৎ থাকবে নিয়মটি। প্রশাসনের দাবি, যাঁদের এখনও টিকাকরণ হয়নি, তাঁরাই বেশি সংক্রমিত হচ্ছেন। তাই এই কড়াকড়ি। যা ঘিরেই শুরু বিতর্ক। আজ থেকে আইফেল টাওয়ার-সহ দেশের একাধিক জনপ্রিয় স্থানে এই নিয়ম চালু হয়ে গিয়েছে। কালই সে দেশে ২১ হাজার জন নতুন সংক্রমিতের হদিস মিলেছে।