(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে শুল্কযুদ্ধ অব্যাহত। বৃহস্পতিবার রাতে (ভারতীয় সময় অনুসারে) জানা যায়, আমেরিকার বাজারে চিনা পণ্যের উপর মোট শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ১২৫ শতাংশ নয়, ১৪৫ শতাংশ হয়েছে। সেই সিদ্ধান্তের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই এ বার চিনও মার্কিন পণ্যের উপর শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি করল। এত দিন মার্কিন পণ্যের উপর ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল বেজিং। শুক্রবার তারা ঘোষণা করল, ৮৪ নয়, এ বার থেকে মার্কিন পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ধার্য করা হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স চিনা অর্থ মন্ত্রকের বার্তা উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘‘আমেরিকা যদি চিনের স্বার্থের উপর বার বার আঘাত হানে, তবে চিনও দৃঢ় ভাবে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে।’’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ‘একজোট’ হয়ে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে চিনের সঙ্গে আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানির দিকে। দু’দেশের শুল্ক সংঘাতের আবহে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের শুরুর দিকেই চিনা পণ্যের উপর ২০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। চিনা পণ্যের উপরেও ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপান ট্রাম্প। চিন পাল্টা শুল্ক চাপালে ট্রাম্প আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন এবং মোট শুল্কের পরিমাণ হয় ৮৪ শতাংশ। তার সঙ্গে পূর্বের ২০ শতাংশ শুল্ক যুক্ত করলে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। থেমে থাকেননি ট্রাম্পও। তিনি দফায় দফায় চিনা পণ্যের উপ শুল্ক বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন। ১২৫ শতাংশ করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সেই শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করা হয়।
১২৫ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি পেয়ে কেন ১৪৫ শতাংশ হল, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিক। ওই আধিকারিকের ব্যাখ্যায়, ট্রাম্পের নতুন ঘোষণায় চিনা পণ্যের উপর শুল্ক ৮৪ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১২৫ শতাংশ করা হয়েছে। তবে নিষিদ্ধ ওষুধ ফেন্টানাইল সংক্রান্ত বিতর্কে চিনের উপর আরও ২০ শতাংশ শুল্ক আগে থেকেই ধার্য রয়েছে। ওই ২০ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে বর্ধিত ১২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। ফলে চিনা পণ্যে মোট শুল্কের পরিমাণ হবে ১৪৫ শতাংশ।
চিনের বিরুদ্ধে শুল্কযুদ্ধ অব্যাহত রাখলেও অন্যান্য দেশের সঙ্গে ‘সমঝোতা’র পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। গত ২ এপ্রিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পরিমাণ পাল্টা শুল্ক আরোপের কথা জানান। কোন দেশের উপর কত পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে, তারও তালিকা দেন ট্রাম্প। তবে বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, ৯০ দিনের জন্য নয়া শুল্কনীতি স্থগিত রাখছেন। তবে সেই তালিকা থেকে বাদ শুধু চিন।