(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
আমেরিকার সঙ্গে চিনের বাণিজ্যযুদ্ধ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। কখনও আমেরিকা শুল্ক চাপিয়ে চিনের অর্থনীতিতে আঘাত হানছে, কখনও তার জবাবে আমেরিকান পণ্যের উপর শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি করছে চিন! সেই আবহে এ বার বেজিং জানাল, আমেরিকায় বিরল খনিজ এবং চুম্বক রফতানি বন্ধ রাখা হবে। চিনের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে বিপদে পড়তে পারে আমেরিকা!
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাণিজ্যযুদ্ধ কী ভাবে মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে আলোচনা করছিল শি জিনপিঙের সরকার। চিন থেকে কোন কোন পদার্থ রফতানি করা হবে, তার জন্য একটি নতুন নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার খসড়া তৈরি করেছে চিন প্রশাসন। সেই খসড়া তালিকাতেই রয়েছে বিরল খনিজ এবং চুম্বকের কথা।
গাড়ি থেকে শুরু করে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে চুম্বক অপরিহার্য। চিন প্রশাসন ইতিমধ্যেই বিভিন্ন চিনা বন্দরে এই চুম্বক পাঠানো বন্ধ করেছে। শুধু তা-ই নয়, বিরল খনিজ পদার্থও আমেরিকাতে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই খনিজ বৈদ্যুতিন গাড়ি থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সরঞ্জাম তৈরিতে কাজে লাগে। আমেরিকাই বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ বিরল খনিজ এবং চুম্বক আমদানি করে, যার বেশির ভাগটাই আসে চিন থেকে। অনেকের মতে, বেজিং যদি এই দুই দ্রব্য মার্কিন মুলুকে না পাঠায়, তবে চাপে পড়বে সে দেশের বিভিন্ন শিল্প।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে চিনের সঙ্গে আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানির দিকে। দু’দেশের শুল্ক সংঘাতের আবহে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েক দিন আগেই আমেরিকার বাজারে চিনা পণ্যের উপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। সেই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতে পাল্টা জবাব দেয় বেজিংও। শুক্রবার তারা ঘোষণা করে, ৮৪ নয়, এ বার থেকে মার্কিন পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ধার্য করা হচ্ছে। একই সঙ্গে শেষ পর্যন্ত লড়াই করার কথাও শোনা যাচ্ছে চিন প্রশাসনের গলায়।
প্রায় প্রতি দিনই ওয়াশিংটন এবং বেজিঙের মধ্যে শুল্ক নিয়ে বাগ্যুদ্ধ চলছে। এখনও পর্যন্ত কোনও পক্ষই নরম মনোভাব দেখায়নি। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। সেই আবহেই এ বার চিন রফতানির বিষয়ে কঠোর নীতি নিতে চলেছে।