খলিস্তানপন্থী ‘সন্ত্রাসী’ অর্শদীপ সিংহ ওরফে অর্শ ডাল্লা। —ফাইল চিত্র।
গ্রেফতারির তিন সপ্তাহের মধ্যেই জামিন পেয়ে গেলেন খলিস্তানপন্থী সন্ত্রাসী অর্শদীপ সিংহ গিল ওরফে অর্শ ডাল্লা। কানাডার আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। অর্শদীপের গ্রেফতারির পরই তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু তার মধ্যেই তাঁর জামিন মঞ্জুর হওয়ায় ভারতের উদ্বেগ বাড়ল বলেই মনে করছেন অনেকে। অর্শদীপকে ৩০ হাজার আমেরিকান ডলারের বন্ডে জামিন দিয়েছেন বিচারক। ভারতীয় মুদ্রায় তার পরিমাণ ২৫ লক্ষের বেশি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি পরের বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি।
সেপ্টেম্বর মাসে কানাডার মিলটন শহরে একটি গুলিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। তদন্তকারীদের সন্দেহ, সেই ঘটনায় যোগ ছিল অর্শদীপের। আততায়ীদের আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন তিনিই। সেই মামলাতে গত ২৮ অক্টোবর কানাডার অন্টারিওতে গ্রেফতার করা হয় অর্শদীপকে। তার পর থেকেই তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সে ব্যাপারে কথাবার্তা চলছিল কানাডা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। অর্শদীপের জামিন মঞ্জুর হওয়ায় সেই প্রক্রিয়ায় ধাক্কা খেল বলে মত অনেকের। তবে সূত্রের খবর, অর্শদীপের প্রত্যপর্ণের ব্যাপারে পিছু হটবে না ভারত সরকার। গত মাসেই কানাডার অন্টারিওর এক আদালতে ভারত সরকারের প্রত্যপর্ণের অনুরোধ সংক্রান্ত মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
ভারতে একাধিক সন্ত্রাসমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে অর্শদীপের বিরুদ্ধে। ভারতের তরফে তাঁকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ঘোষণাও করা হয়েছিল। তবে নাগাল পাওয়া যায়নি। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, কানাডায় স্ত্রীকে নিয়ে বাস করছিলেন অর্শদীপ। খলিস্তানপন্থী সন্ত্রাসবাদী হরদীপ সিংহ নিজ্জর হত্যায় ভারত যুক্ত বলে অভিযোগ তুলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। পাল্টা ভারতের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ রাজনীতির অঙ্কে কানাডার মাটিকে ভারত-বিরোধী খলিস্তানিদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হতে দিচ্ছে ট্রুডো সরকার। যে নিজ্জরকে নিয়ে এত বিতর্ক, ডাল্লা নিজেকে সেই নিজ্জরেরই অনুগামী বলে মনে করে থাকেন। শুধু তা-ই নয়, নিজ্জরের অবর্তমানে তাঁর তৈরি খলিস্তানপন্থী উগ্রবাদী সংগঠন খলিস্তানি টাইগার ফোর্স (কেটিএফ)-এরও দেখভাল করতেন তিনি।
খুন, হুমকি দিয়ে টাকা তোলা-সহ একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত ডাল্লা অপরাধ জগতে নাম লেখান ভারতেই। তখন তিনি পঞ্জাবের মোগার বাসিন্দা। সেখানেই ছোটখাটো নানা অপরাধে হাত পাকান তিনি। তার পর ‘গ্যাংস্টার’ হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৮ সালে কানাডায় পাড়ি দেন। সে দেশে গিয়ে নিজ্জরের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। প্রথমে নিজ্জরের সঙ্গে যৌথ ভাবে, তার পরে একাই ‘খলিস্তানপন্থী সন্ত্রাস’ চালিয়ে যান তিনি।