কানাডায় খলিস্তানপন্থীদের উপস্থিতি স্বীকার করলেন জাস্টিন ট্রুডো। —ফাইল চিত্র।
ভারত-কানাডা সম্পর্কে নজিরবিহীন ‘শৈত্য’-এর মাঝে স্বীকারোক্তি সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর। কানাডায় খলিস্তানপন্থীদের উপস্থিতির কথা প্রথম বার স্বীকার করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রু়ডো। যদিও পর ক্ষণেই তিনি জানান, খলিস্তানপন্থীরা কানাডায় বসবাসকারী শিখ সম্প্রদায়ের সামগ্রিক চিত্রকে তুলে ধরে না। ওটায়ায় পার্লামেন্ট হিলে দীপাবলির একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই এই মন্তব্য করেন ট্রুডো।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-কানাডা সম্পর্কের ক্রমে ‘অবনতি’ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বার্তা কানাডায় ‘ব্লক’ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে ভারত। ট্রুডোর কথায়, “কানাডায় অনেক খলিস্তানপন্থী আছেন। তবে সামগ্রিক ভাবে শিখ সম্প্রদায় বলতে সেটি বোঝায় না। মোদী সরকারেরও অনেক সমর্থক রয়েছেন কানাডায়। কিন্তু তাঁরা সার্বিক ভাবে কানাডায় বসবাসকারী হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব করেন না।” প্রসঙ্গত, গত সোমবারই কানাডার পার্লামেন্টে ট্রুডো বলেছিলেন, ‘‘খলিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কানাডায় শিখদের প্রতিনিধিত্ব করেন না।’’ ওই মন্তব্যের পর দীপাবলির অনুষ্ঠানে আবারও সেই বার্তাই দেওয়ার চেষ্টা করলেন ট্রুডো। একই সঙ্গে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন অনেক খলিস্তানপন্থীই কানাডায় রয়েছেন।
তবে দিল্লির সঙ্গে কানাডায় কূটনৈতিক সম্পর্কের যে টানাপড়েন চলছে, সেটিরও একটি প্রচ্ছন্ন বার্তা উঠে এসেছে ট্রুডোর গলায়। তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, কানাডায় বসবাসকারী সকল হিন্দু মোদীর সরকারের সমর্থক নন। উল্লেখ্য, কানাডার সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক সাম্প্রতিক কালে বেশ টলমল পরিস্থিতিতে রয়েছে। খলিস্তানিপন্থী নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যার পর থেকেই কানাডা এবং ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো। যদিও ভারত তা শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছে।
চলতি সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া সফরকালে ক্যানবেরা থেকে ট্রুডোর প্রশাসনের সমালোচনা করেছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কানাডায় ভারত-বিরোধী মনোভাবকে প্রশ্রয় দেওয়া নিয়ে সরব হন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাঁর এই মন্তব্যের সময় যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী পেনি ওয়াংও। জয়শঙ্কর জানিয়েছিলেন, কোনও প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ তুলছে কানাডা। সে দেশে ভারতীয় কূটনীতিকদের গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলেও অভিযোগ জয়শঙ্করের। তাঁর মতে, এটি কোনও অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। অভিযোগ, সেই সাংবাদিক বৈঠকের ক্লিপটি কানাডায় ‘ব্লক’ করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার তা কানাডা সরকারের সমালোচনা করেছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তিনি বলেছিলেন, “এ সব করে বাক্স্বাধীনতা নিয়ে (কানাডার) ভণ্ডামি আবারও প্রকাশ পাচ্ছে।”