‘পুরুষ’ ও ‘নারী’ শব্দ দুটির গতানুগতিক অর্থের পরিবর্তনে সচেষ্ট হল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিধান। প্রতীকী ছবি।
‘পুরুষ’ ও ‘নারী’ শব্দ দুটির গতানুগতিক অর্থের পরিবর্তনে সচেষ্ট হল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিধান। বরাবরই অভিধানে ‘পুরুষ’ ও ‘নারী’র সংজ্ঞা ছিল লিঙ্গের উপর ভিত্তি করে। পরে ‘রূপান্তরকামী’র সংজ্ঞা যুক্ত হয়। এ বার কেমব্রিজ অভিধানে সেই সংজ্ঞায় যুক্ত করা হল অপর এক ভিন্ন মাত্রা। যাতে জন্মগত লিঙ্গ পরিচয় ছাড়াও রূপান্তরকামী মানুষ ও লিঙ্গান্তরিত মানুষের পরিচয়ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গত অক্টোবরেই এই পরিবর্তন হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। একই সঙ্গে রয়েছে আগের গতানুগতিক সংজ্ঞাগুলিও।
নতুন সংযোজিত সংজ্ঞা অনুসারে এখন অভিধানটিতে পুরুষের নতুন সংজ্ঞা হল— যিনি নিজেকে পুরুষ হিসাবে চিহ্নিত করেন। অর্থাৎ বলা যায়, এ ক্ষেত্রে তিনি জন্মগত ভাবে কোন লিঙ্গের তা বিবেচ্য নয়। একই ভাবে নারীর নতুন সংজ্ঞা হল—যে মানুষ নিজেকে নারী হিসাবে চিহ্নিত করেন। সহজ কথায়, রূপান্তরকামী এবং লিঙ্গান্তরিত নারী-পুরুষও এই ‘পরিবর্তিত’ সংজ্ঞা দুটিতে অন্তর্ভুক্ত। রয়েছে উপযুক্ত উদাহরণও, যেখানে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে লিঙ্গ পরিচয় শুধু যৌন চিহ্নের উপর নির্ভরশীল নয়।
কেমব্রিজ অভিধানের তরফে এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সম্পাদকেরা দীর্ঘ গবেষণার পরে সমাজে ‘নারী’ শব্দটি কোন আঙ্গিকে ব্যবহার করা হচ্ছে সেই নিরিখে আভিধানিক সংজ্ঞাটি তৈরি করেন গত অক্টোবরে। একই ভাবে তৈরি হয় ‘পুরুষ’-এর সংজ্ঞাও।
শুধু লিঙ্গের উপর ভিত্তি করেই পুরুষ বা নারী পরিচয় ধার্য করা যথাযথ কি না, এই বিতর্ক বহু দিনের। রূপান্তরকামী ও লিঙ্গান্তরিত মানুষ-সহ অনেকের দাবি, একটি মানুষের জন্মগত লিঙ্গের সঙ্গে তার জেন্ডার আইডেন্টিটি ভিন্ন হতে পারে। এর কারণ, এই পরিচয় মূলত মানুষটি নিজেকে কোন লিঙ্গের মনে করেন তার উপর নির্ভর করে। ফলে, কেউ পুরুষ হিসাবে জন্মালেও নিজেকে নারী হিসাবে চিহ্নিত করতেই পারেন। লিঙ্গ এবং যৌনতাকে একে-অপরের পরিপূরক করে তোলার যে প্রবণতা যুগ-যুগ ধরে চলে আসছে, সেই নিয়েই বার বার প্রশ্ন তুলেছেন লিঙ্গসাম্য আন্দোলনকারীরা। বলা চলে, কেমব্রিজ অভিধানের এই পদক্ষেপ সেই আন্দোলনের পথ আর একটু সহজ করে দিল।