শিকাগোয় আক্রান্ত সৈয়দ মাজাহির আলি। ছবি সংগৃহীত।
শিকাগো শহরে ভারতীয় পড়ুয়ার উপর হামলার ঘটনায় আক্রান্তের আর্জি মেনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল আমেরিকার ভারতীয় দূতাবাস। সব রকম সহায়তা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
হায়দরাবাদের বাসিন্দা সৈয়দ মাজাহির আলি, শিকাগোর রাস্তায় রাতের অন্ধকারে চার জন সশস্ত্র ছিনতাইবাজের হাতে আক্রান্ত হন। সেই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ভিডিয়োতে হামলার ঘটনা দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়াও আরও একটি ভিডিয়োকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে পড়ে গিয়েছে। সেই ভিডিয়োটি সৈয়দের। সেখানে দেখা যাচ্ছে, সৈয়দের মুখ দিয়ে ঝরঝর করে রক্ত পড়ছে। আর তিনি হাত জোড় করে সাহায্য প্রার্থনা করছেন। তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, কী ভাবে তিনি আক্রান্ত হয়েছেন চার জনের হাতে এবং তাঁকে সাহায্য করার জন্য। সৈয়দের এমন অবস্থা দেখে তাঁর স্ত্রী সৈয়দা রুকিয়া ফাতিমা, স্বামীর সুরক্ষা এবং শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে চিঠিও লেখেন।
আমেরিকার ভারতীয় দূতাবাস এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে সৈয়দকে সাহায্য করার কথা জানিয়েছে। তারা জানায়, “কনস্যুলেট ভারতীয় ছাত্র সৈয়দ এবং তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এমনকি, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে কনস্যুলেট। ঘটনাটির তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কেও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’’
ভাইরাল হওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সৈয়দ রাতের খাবার কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। সে সময় চার জন দুষ্কৃতী ঘিরে ধরে তাঁকে। তাঁর কাছে থাকা ব্যাগ, জিনিসপত্র, মোবাইল এবং টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। ছিনতাইবাজদের হাত থেকে বাঁচতে দৌঁড় দেন সৈয়দ। তাঁকে ধাওয়া করে ছিনতাইবাজরা। পিছন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় রাস্তার উপর। তার পর সৈয়দকে ব্যাপক মারধর করা হয়। ঘুষি মেরে চোখ-মুখ ফাটিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা।
সৈয়দ পরে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। সেখানে রক্তাক্ত সৈয়দ সাহায্যের আর্জি জানান। তিনি আরও অভিযোগ করেন, তাঁর মোবাইল চুরি করে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার কথা জানিয়ে সৈয়দের স্ত্রী বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে চিঠি লিখেও সাহায্য চান। চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘‘শিকাগোতে আমার স্বামীর নিরাপত্তা নিয়ে আমি খুবই চিন্তিত। আপনাকে অনুরোধ করছি সৈয়দের চিকিৎসা পেতে সাহায্য করার জন্য। যদি সম্ভব হয় দয়া করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করুন যাতে আমি আমাদের তিন সন্তানকে নিয়ে আমার স্বামীর সঙ্গে থাকতে আমেরিকায় যেতে পারি।”
হায়দরাবাদের লঙ্গর হৌজ এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ। স্নাতোকত্তর স্তরের পড়াশোনা করতেই আমেরিকায় উড়ে গিয়েছিলেন। ইন্ডিয়ানা ওয়েসলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। থাকেন শিকাগো শহরে।