বাংলাদেশে জঙ্গি সন্ত্রাস ও ইসলামি মৌলবাদ ছড়ানোয় ব্রিটিশ জেহাদিরা মদত দিচ্ছে বলে দাবি করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর মতে, ব্রিটেনে প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের একাংশের মধ্যে জামাতে ইসলামির প্রভাব রয়েছে। তার ফলে সন্ত্রাস ও মৌলবাদ ছ়়ড়ানোর জন্য ব্রিটেন থেকে টাকা পাঠানো হচ্ছে। সম্প্রতি এই বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সাহায্য চেয়েছেন হাসিনা।
একটি ব্রিটিশ সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাসিনা জানান , পূর্ব লন্ডনের প্রবাসী বাংলাদেশিদের একাংশের মধ্যে জামাতের প্রভাব প্রবল। তাই তারা সেখান থেকে সহজেই অর্থ সংগ্রহ করে ব্রিটেনে পাঠাতে পারে। হাসিনার কথায়, ‘‘বিষয়টি রুখতে ব্রিটিশ সরকারের আরও পদক্ষেপ করা উচিত।’’
লন্ডনের প্রবাসী বাঙালি সম্প্রদায়ের একাংশের সঙ্গে বাংলাদেশি মুসলিম মৌলবাদীদের যোগ নতুন নয় বলেই ঢাকার গোয়েন্দা সূত্রে খবর। জামাতে ইসলামির নেতাদের বক্তৃতা দিতে ডাকার কথা নিজেদের ওয়েবসাইটেই স্বীকার করে নিয়েছেন পূর্ব লন্ডনের জনপ্রিয় ‘ইস্ট লন্ডন মসজিদ’ কর্তৃপক্ষ। বক্তাদের মধ্যে ছিলেন জামাতের প্রাক্তন এমপি দিলওয়ার হুসেন জাইদি। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৩ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয় বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা, সেনাবাহিনী ও নাগরিক সমাজের একাংশের মতে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ জেহাদিরা নয়া প্রজন্মের বাংলাদেশি মৌলবাদীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তারা ইরাক ও সিরিয়ায় সক্রিয় জঙ্গি সংগঠন আইএসের প্রতি সহানুভূতিশীল। ঢাকায় মুক্তমনা ব্লগারদের হত্যাকাণ্ডে সম্প্রতি গ্রেফতার হয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক তৌহিদুর রহমান। ব্রিটিশ জেহাদিদের সঙ্গে বাংলাদেশের মৌলবাদীদের যোগাযোগ নিয়ে আরও তথ্য ঢাকার গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। আবার সিরিয়ায় মার্কিন ও ব্রিটিশ ড্রোন হামলায় রাহুল আমিন ও রেয়াদ খান নামে দুই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ জঙ্গি নিহত হওয়ার কথাও সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশের এক প্রাক্তন সেনা অফিসারের মতে, এখন প্রায় ৩০ জন বাংলাদেশি ইরাক-সিরিয়ায় আইএসের হয়ে লড়ছে। তবে সরকারের তরফে এখনও এই তথ্যের সমর্থন পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ ভারত থেকে আইএসের হয়ে লড়তে যাওয়ার ‘ট্রানজিট রুট’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্রিটেন-সহ পশ্চিমী দেশগুলি থেকে আসা জেহাদিদের পক্ষে বাংলাদেশি যুবকদের একটি অংশকে প্রভাবিত করাও তেমন কঠিন নয় বলে মনে করেন ওই প্রাক্তন সেনা অফিসার। কারণ, বাংলাদেশের বেকারি ও দারিদ্র।
পরের নির্বাচনে খালেদা জিয়ার বিএনপি জিতলে বাংলাদেশে খালেদার মিত্র জামাতে ইসলামি-সহ মুসলিম মৌলবাদীদের প্রভাব বাড়বে, নিশ্চিত ঢাকার সাংবাদিক ও লেখক শাহরিয়ার কবীর। ব্রিটেন-সহ নানা পশ্চিমী দেশ থেকে আসা জেহাদিরা বাংলাদেশে জঙ্গি সন্ত্রাস ছড়়াতে সাহায্য করছে বলে মনে করেন তিনিও।
ভোর ৫টা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে ওই সংঘর্ষ। বিমানবাহিনী জানায়, পেশাওয়ার থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে ওই বিমানঘাঁটি মূলত সেনাদের থাকার জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছিল। ফলে ঘটনার সময় সেখানে সেনা ছাড়াও ছিলেন অন্যরা।
ঘটনার পর তেহরিক-ই-তালিবানের মুখপাত্র মহম্মদ খুরাসানি ই-মেল মারফত হামলার দায় স্বীকার করেন। বলেন, ‘‘ওই বিমানঘাঁটি থেকে নিয়মিত আমাদের উপর আক্রমণ চালানো হয়। আমাদের আত্মঘাতী জঙ্গির একটি দল হামলাটি চালিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, মহিলা ও বাচ্চাদের নিরাপদ রেখেই জঙ্গিরা ৫০ জন সেনাকে হত্যা করেছে। যদিও সেই তথ্যের কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ দিন ঘটনাস্থলে যান পাক সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ। বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র জেনারেল অসীম বাজওয়া জানান, সেনাঘাঁটির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কোনও জঙ্গি গা-ঢাকা দিয়ে আছে কি না, খোঁজ করা হচ্ছে তা-ও। ইতিমধ্যেই তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫ জনকে।
এ দিনই পঞ্জাব প্রদেশের কর্মা বিমানঘাঁটিতেও জঙ্গি হানার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে সময় থাকতে এক জঙ্গি গ্রেফতার হওয়ায় তা ঠেকানো সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে পাক পুলিশ।