আইএস জঙ্গিদের শেষ করতে ব্রিটিশদের নতুন অস্ত্র বলিউডের গান!

কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠনটার দাপটে কাঁপছে গোটা গোটা মধ্য এশিয়া। কাঁপছে আফ্রিকার বিরাট অংশ। ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়ার গন্ডি ছাড়িয়ে তারা নাশকতা চালাচ্ছে অন্যান্য দেশেও। কিন্তু সেই আইএস এখন কাঁপছে বলিউডের ভয়ে। বলিউডি গান ব্যবহার করে জঙ্গিদের নাস্তানাবুদ করতে শুরু করেছে ব্রিটিশ বাহিনী। তাও আবার এক পাকিস্তানির পরামর্শে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৬ ১১:৪১
Share:

কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠনটার দাপটে কাঁপছে গোটা গোটা মধ্য এশিয়া। কাঁপছে আফ্রিকার বিরাট অংশ। ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়ার গন্ডি ছাড়িয়ে তারা নাশকতা চালাচ্ছে অন্যান্য দেশেও। কিন্তু সেই আইএস এখন কাঁপছে বলিউডের ভয়ে। বলিউডি গান ব্যবহার করে জঙ্গিদের নাস্তানাবুদ করতে শুরু করেছে ব্রিটিশ বাহিনী। তাও আবার এক পাকিস্তানির পরামর্শে।

Advertisement

ইসলামি আইন অনুসারে গান-বাজনা করা এবং শোনা ঘোর পাপ। আল্লাহ্‌র ভজনা করে গাওয়া গান ছাড়া অন্য যে কোনও রকমের গান-বাজনায় অংশ নেওয়া শরিয়ত অনুযায়ী নিষিদ্ধ। কিন্তু বলিউডে চড়া মিউজিক আর তুমুল হুল্লোড়ে ঠাসা চটুল গানের অভাব নেই। লিবিয়ার বিভিন্ন এলাকায় শক্তিশালী সাউন্ডবক্সের মাধ্যমে এখন সেই সব বলিউডি গানই বাজাতে শুরু করেছে ব্রিটিশ বাহিনী। লিবিয়ার সিরতে শহর এখন আইএস জঙ্গিদের দখলে। ১৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ লিবীয় উপকূলও আইএস জঙ্গিরা কব্জা করে নিয়েছে। কী ভাবে ওই এলাকা থেকে আইএস জঙ্গিদের হঠানো যায়, ব্রিটিশ বাহিনী তারই প্রশিক্ষণ দিচ্ছে লিবিয়ার সেনাবাহিনীকে। আইএস জঙ্গিদের ঘাঁটি যে সব এলাকায়, সেখানে সাউন্ডবক্স লাগানো গাড়ি পাঠিয়ে চড়া স্বরে বলিউডি গান বাজানো হচ্ছে। কট্টরবাদী এবং শরিয়তি আইন অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা আইএস জঙ্গিরা এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। চটুল বলিউডি গান কানে আসা তাদের কাছে মহাপাপ। কিন্তু গান থামানো যাচ্ছে না। দূর থেকে ভেসে আসা শক্তিশালী সাউন্ডবক্সের আওয়াজ রুখতে পারছে না জঙ্গিরা।

এক পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত গোয়েন্দা ব্রিটিশ সেনাকে প্রথম এই পরামর্শ দেন বলে জানা গিয়েছে। পাকিস্তান-সহ বিভিন্ন ইসলামি দেশে কট্টরবাদীদের কাছে বলিউড মিউজিক কতটা ‘হারাম’, তা ভালই জানেন ওই গোয়েন্দা অফিসার। তিনিই ব্রিটিশ বাহিনীকে পরামর্শ দেন, আইএস জঙ্গিদের মনোবল ভাঙতে বলিউড মিউজিক বাজানো শুরু হোক। নিজেদের দখল করা এলাকায় শরিয়তি আইন কঠোর ভাবে কার্যকর করে আইএস জঙ্গিরা প্রবল অত্মপ্রসাদ অনুভব করে। তারা ভাবে পরম ধার্মিক পরিবেশ তৈরি করা গিয়েছে। কিন্তু বলিউড মিউজিকের হানাদারি তাদের সেই ‘ধার্মিক পরিবেশ’ এখন খান খান করে দিচ্ছে। আইএস জঙ্গিদের মনে হচ্ছে, গান রুখতে না পেরে তারা নিজেরা পাপের ভাগী হচ্ছে। সিরতে এবং আশপাশের অঞ্চলে জোর করে সমস্ত গান-বাজনা বন্ধ করে দিয়েছিল আইএস। সাধারণ মানুষকেও গান-বাজনা করতে দেওয়া হয় না। কিন্তু ব্রিটেন আর লিবিয়ার সেনা যে নতুন কৌশল নিয়েছে, তাতে আইএস-এর কঠোর নিয়ন্ত্রণ অকেজো হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ ঘরে বসেই দূর থেকে ভেসে আসা বলিউডি গান উপভোগ করতে শুরু করেছেন বলে জঙ্গিরা সন্দেহ করছে। এতে নৈতিক জোর হারাচ্ছে জঙ্গি বাহিনী।

Advertisement

আরও পড়ুন:

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে যৌনদাসীদের বিক্রি করছে আইএস জঙ্গিরা!

বলিউডি গান জঙ্গিদের ঘাঁটি চিহ্নিত করতেও কাজে লাগছে। সাউন্ডবক্স লাগানো গাড়ি যে অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে, তার খুব কাছাকাছি জঙ্গি ঘাঁটি না থাকলে, গাড়িতে হামলা হচ্ছে না। কিন্তু গাড়ি জঙ্গি ডেরার কাছাকাছি পৌঁছে গেলে তাতে হামলা হচ্ছে। না হলে গানের দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে রেডিও বার্তায় জঙ্গিরা নিজেদের উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছে সমস্যার কথা। এই রেডিও বার্তায় আড়ি পেতে ব্রিটিশ এবং লিবিয়ার বাহিনী বুঝে নিচ্ছে, ঠিক কোথাও কোথায় গোপন ডেরা রয়েছে জঙ্গিদের। তার পরই সেখানে আক্রমণ চালানো হচ্ছে।

বলিউড এ ভাবেই এখন লিবিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে আইএস-এর প্রবল প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement