বরিস জনসন ফাইল চিত্র
প্রয়োজনে তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করবে তাঁর সরকার। গত কাল এ কথা জানিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি একটা বিষয়ে সকলকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, আফগানিস্তানে যে কোনও ধরনের সমাধান সূত্র বার করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জারি রাখতে চায় আমাদের সরকার। সেই প্রচেষ্টায় দরকার পড়লে তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গেও কাজ করব আমরা।’’
বরিস দাবি করেছেন, গত কয়েক দিনের তুলনায় কাবুল বিমানবন্দরের অরাজক পরিস্থিতি একটু একটু করে স্থিতিশীল হচ্ছে। আজ তাঁর প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তান থেকে এখনও পর্যন্ত ১৬১৫ জনকে ব্রিটেনে উড়িয়ে আনা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ৩৯৯ জন ব্রিটিশ নাগরিক, ৩২০ জন দূতাবাস কর্মী এবং ৪০২ জন আফগান শরণার্থী রয়েছেন। আফগানিস্তান সঙ্কট সামলানো নিয়ে দেশে বিরোধীদের প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রী ডমিনিক রাব। বরিস অবশ্য কাল সাংবাদিক বৈঠকে ডমিনিকের পক্ষেই সওয়াল করেছেন। বিরোধীরা বিদেশমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করে চলেছেন। বরিস স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি তাঁর মন্ত্রীর পাশেই আছেন।
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে গত কাল ফের মুখ খুলেছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও। দিন তিনেক আগে একটি আমেরিকান নিউজ় চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বাইডেন। কাল হোয়াইট হাউসের সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। দেশ জুড়ে চলা প্রবল নিন্দার মধ্যেও প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘‘কাবুল থেকে এত মানুষকে উদ্ধার করে আনা আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে কঠিনতম চ্যালেঞ্জ।’’
বর্তমানে ঠিক কত সংখ্যক আমেরিকার নাগরিক আফগানিস্তানে রয়েছেন, তার হিসেব তাঁর প্রশাসনের কাছে নেই বলে জানিয়েছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট। তবে তাঁর কথায়, ‘‘আমি কথা দিচ্ছি আফগানিস্তানে যে সব আমেরিকান আর থাকতে চাইছেন না, তাঁদের আমরা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবই।’’
একই সঙ্গে বাইডেন জানিয়েছেন, এত বছর যে সব আফগান নাগরিক আমেরিকান বাহিনীকে সাহায্য করেছেন, তাঁদেরও দেশ ছাড়তে সাহায্য করতে চায় তাঁর প্রশাসন। কারণ তাঁরা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তবে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট আরও এক বার স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে তাঁদের সেনা বাহিনী কোনও সামরিক অভিযান চালাচ্ছে না।
এ দিকে, আফগানিস্তানের প্রশাসনিক পরিকাঠামো যাতে পুরোপুরি ভেঙে না পড়ে, তার জন্য গোটা বিশ্বের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে পাশে বসিয়ে গত কাল পুতিন বলেছেন, ‘‘তালিবান এখন আফগানিস্তানের প্রায় প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে। এটাই বাস্তব পরিস্থিতি। আর সেখানকার পরিকাঠামো যাতে ভেঙে না পড়ে, আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’’ পুতিন অবশ্য এ ও জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের পড়শি দেশগুলোয় যাতে শরণার্থীর ছদ্মবেশে জঙ্গিরা ঢুকে পড়তে না পারে, সে বিষয়ে নজর রাখা প্রয়োজন।