পদত্যাগ করলেন বরিসের ভাই জো জনসন

জো-এর ইস্তফা প্রধানমন্ত্রী বরিসের রাজনৈতিক কেরিয়ারে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন ফেলে দিল।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪২
Share:

জো জনসন।—ছবি রয়টার্স।

ভোটে পরপর হারার পরে ফের ধাক্কার মুখে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এমপি ও মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তাঁর ছোট ভাই জো জনসন। যিনি বলেছেন, ‘‘পারিবারিক বিশ্বস্ততা এবং দেশের স্বার্থের টানাপড়েনে’’ অসুবিধে হচ্ছিল।

Advertisement

জো-এর ইস্তফা প্রধানমন্ত্রী বরিসের রাজনৈতিক কেরিয়ারে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন ফেলে দিল। যা-ই ঘটুক না কেন, ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট করিয়ে ছাড়বেন— এই গোঁ ধরে রেখে বরিস ইতিমধ্যেই ২১ জন এমপিকে বরখাস্ত করেছেন। হাউস অব কমন্সে প্রথম বারের ভোটেই মুখ পুড়িয়েছেন। তার পর ভাইয়ের সরে যাওয়া তাঁকে আরও চাপে ফেলবে, সন্দেহ নেই।

জো জনসন এ দিন টুইট করে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘গত ন’বছর ধরে ওরপিংটনের প্রতিনিধিত্ব করে নিজেকে খুবই গর্বিত মনে করছি। তিন জন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে মন্ত্রিত্ব সামলেছি। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে পারিবারিক বিশ্বস্ততা এবং জাতীয় স্বার্থের সংঘাতে আমি বিপর্যস্ত। যার সমাধান খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাই আমার পরিবর্তে অন্য কেউ মন্ত্রী ও এমপি হোন।’’ জো অবশ্য প্রথম থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার বিপক্ষে ছিলেন। ২০১৬ সালের গণভোটে তাঁর ভাই বরিস ছিলেন বিপরীত মেরুতে। জো অবশ্য গত বছরও টেরেসা মে-র মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়ান তাঁর ব্রেক্সিট চুক্তি পছন্দ না হওয়ায়। কিন্তু বরিস প্রধানমন্ত্রী হয়ে ফের তাঁকে মন্ত্রিসভায় ফেরান।

Advertisement

১০ ডাউনিং স্ট্রিটের তরফে আজ জানানো হয়েছে, ‘‘একাধারে রাজনৈতিক নেতা এবং ভাই হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পারছেন, জো-এর পক্ষে এটা খুব সহজ সিদ্ধান্ত ছিল না। ওরপিংটনের মানুষ জানেন, জো-এর মতো যোগ্য প্রতিনিধি মেলা ভার।’’

এর মধ্যে ব্রেক্সিট নিয়ে জলঘোলা বেড়েই চলেছে ব্রিটেনের রাজনীতিতে। প্রধানমন্ত্রী বরিস আজ আবার বিরোধী নেতা জেরেমি করবিনের দিকে আঙুল তুলেছেন। ১৫ অক্টোবর সাধারণ নির্বাচনের ডাক দেওয়া সত্ত্বেও করবিন তাতে সায় দেননি, আর সেটাতেই চটেছেন বরিস। তাঁর মতে, ‘‘এটা গণতন্ত্রের প্রতি কাপুরুষোচিত অপমান ছাড়া আর কিছু নয়।’’ বরিসের দল কনজ়ারভেটিভ পার্টি আগামী সোমবার ফের সাধারণ নির্বাচন চেয়ে বিল আনবে। করবিনের বক্তব্য, ব্রেক্সিট পিছোতে চেয়ে তাঁরা যে বিল এনেছেন, তা পাশ হওয়ার পরেই নির্বাচনের জন্য আনা বিল নিয়ে ভাবনাচিন্তা করবেন তাঁরা।

ব্রাসেলসে আগামী ১৭ অক্টোবর বরিসের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের দেখা হওয়ার কথা। তার আগেই নির্বাচন সেরে ফেলতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বিরোধীদের আপত্তিতে তিনি সেটা কত দূর করতে পারবেন, সন্দেহ রয়েছে। তবে বরিস নিজে দিনের শেষে ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারে সাংবাদিকদের সামনে বলেছেন, ‘‘গর্তে পড়ে মরে যাব, তবু দেরিতে ব্রেক্সিট ভাবতেই পারব না।’’ পরে তাঁর সংযোজন, ‘‘ব্রেক্সিট নিয়ে এই বিতর্কে ঘেন্না ধরে গেল। আমি নির্বাচন করাতে চাইনি। কিন্তু এটার সমাধানও চাই।’’

দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘জনতাই ঠিক করুন, তাঁরা ইউরোপীয় ইউনিয়নে জেরেমি করবিনের সঙ্গে থেকে যাবেন, নাকি ৩১ অক্টোবর ইইউ ছেড়ে বেরিয়ে যাবেন।’’ গত কাল পার্লামেন্টে যা হয়েছে, তাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে বরিস জানিয়েছেন, আমাদের মীমাংসা করার ক্ষমতা নষ্ট করে চুক্তি করার পথটাই কঠিন করে দেওয়া হল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement