বরিস জনসন। — ফাইল চিত্র
আগামী ৩ ডিসেম্বর থেকে দেশের বিভিন্ন অংশে ত্রিস্তরীয় লকডাউন চালু করতে গিয়ে নিজের দলেই প্রবল বিরোধিতার মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ৭০ জন এমপি এ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। ওই এমপি-রা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী যে দাবি করছেন তা প্রমাণ না করা পর্যন্ত তাঁরা ওই প্রস্তাবে সমর্থন জানাবেন না। আগামিকালই ওই লকডাউন ঘোষণা করার কথা বরিসের।
শনিবারই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছিল, ইংল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকায় করোনা সংক্রমণের গ্রাফ খতিয়ে দেখে ত্রিস্তরীয় লকডাউন চালু করা হবে। করোনা সংক্রমণ রুখতে গত ৫ নভেম্বর থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে ব্রিটেনে। আগামী ২ ডিসেম্বর তা শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু নতুন করে লকডাউনের ওই পরিকল্পনায় বেঁকে বসেছেন বরিসের কনজারভেটিভ পার্টিরই এক ঝাঁক এমপি। নয়া লকডাউনের ওই পরিকল্পনা অবশ্য ইতিমধ্যেই হাউজ অব কমন্সে পাশ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ওই এমপি-দের মত, নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপালে তা লাভের থেকে ক্ষতিই বেশি করবে। লাভ-ক্ষতির অঙ্ক কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়ে বরিসের বিশ্লেষণও দাবি করেছেন বিদ্রোহীরা।
প্রাক্তন চিফ হুইপ তথা এমপি মার্ক হারপারের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লেখা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘অনেকের কাছে কোভিড একটি মারণ রোগ তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। এই রোগকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ক্যানসার, ডিমেনশিয়া, হৃৎপিণ্ড জনিত নানা মারণ রোগে আক্রান্তদেরও সমান ভাবে গুরুত্ব দিতে হবে’। নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্য, দারিদ্র, এবং নিম্নমুখী জিডিপির দিকেও নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই চিঠিতে। ওই এমপিদের মত, নতুন করে বিধিনিষেধ চাপানো হলে তা মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বড়সড় প্রভাব ফেলবে। তাঁদের শর্ত, নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপাতে গিয়ে যে মূল্য চোকাতে হবে, তার চেয়ে বেশি মানুষ করোনার হাত থেকে বাঁচাবেন তা নিশ্চিত করলে তবে তাঁরা সমর্থন দেবেন।
আরও পড়ুন: তাদের তৈরি টিকার প্রতি ডোজের দাম ২৫-৩৭ ডলার, জানিয়ে দিল মডার্না
আরও পড়ুন: যুবরানি ডায়ানার বিতর্কিত সাক্ষাৎকার নিয়ে তদন্তে স্বাগত প্রিন্স হ্যারির
অন্তর্দলীয় বিরোধিতার সম্মুখীন হয়ে এখন বিপাকে বরিস। শুধু মাত্র ৭০ জন এমপি-ই নন, লেবার পার্টিও যদি নয়া ওই বিধির বিরোধিতায় নামে তবে সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে ফেলবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে বরিসের কাছে আশার কথা, এখনও পর্যন্ত কোভিড সংক্রান্ত আইনকানুন প্রণয়নে সরকারের পাশেই দাঁড়িয়েছে লেবার পার্টি। তবে অনেকেই মনে করছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই হাতে এসে যাবে করোনার টিকা। তার ফলে ইস্টারের আগেই কাটিয়ে ওঠা যাবে এই ‘নিও নর্মাল’ জীবনযাপন।