সিঙ্গল অথচ পার্টনার নেই? এমন অনেকের কাছে ভ্যালেন্টাইন্স ডেযেন দুঃস্বপ্ন! চারপাশে যুগলদের ভিড়ে তাঁদের অনেকের মন ভার। আহা, কারও হাতে হাত রেখে যদি হাঁটা যেত! এমনটা কি মনে হয় না প্রেম দিবসে? তাই ভ্যালেন্টাইন্স ডে কাটলে তাঁরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। তবে ডেনমার্কের সিঙ্গলসদের ভ্যালেন্টাইন্স ডে শেষেও স্বস্তি নেই। কেন জানেন?
বয়স ২৫? সিঙ্গলস? ডেনমার্কে এমন যুবক-যুবতীদের জন্মদিনে বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয়। তাঁদের সারা গায়ে দারুচিনির গুঁড়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়। অনেকে জলও ছিটিয়ে দেন। যাতে দারুচিনির গুঁড়ো গায়ে লেপ্টে যায়। এটা করতে কারও অনুমতির প্রয়োজন নেই। কেন? যেন মনে করিয়ে দেওয়া, এ বার বাপু তোমার বিয়ের বয়স হয়েছে। ফলে কারও সঙ্গে ঘর বাঁধো।
ঘটনাটা কী? কথিত আছে, এমন প্রথার শুরুটা হয়েছিল বহু শতক আগে। মশলা বিক্রির জন্য যে সমস্ত সেলসম্যানরা ঘুরে বেড়াতেন চারপাশে, তাঁদের পক্ষে ঘর-সংসার পাতা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠত। কোনও এক জায়গায় থিতুই যে হতে পারতেন না। এমন অবিবাহিত সেলসম্যানদের ‘পেপার ডুডস’ বলা হত। অবিবাহিতাদের ‘পেপার মেইডেন’নামে ডাকা হত।
‘পেপার ডুডস’ বা ‘পেপার মেইডেন’দের পথে যাতে ডেনমার্কের তরুণ প্রজন্ম না হাঁটেন, সে জন্যই এই প্রথা মানা হয়। যে সব সিঙ্গলদের বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, অথচ সংসারহীন, তাঁদের গায়ে দারুচিনির গুঁড়ো ছেটানো হয়। তবে তিরিশের কোঠা পেরোলে তাঁদের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। তখন লঙ্কার গুঁড়ো ছেটানো হয় তাঁদের শরীরে।
শুধু কি লঙ্কার গু়ঁড়ো, তার সঙ্গে ডিমও ছোড়া হয়। যাতে ডিমের সঙ্গে মাখামাখি হয়ে সারা দেহে লঙ্কার গুঁড়ো আটকে থাকে।
এমনটা করার মধ্যে দিয়ে তাঁদের যেন ২৫ বছর বয়সের আগেই ঘর বাঁধার বিষয়ে পরোক্ষে উৎসাহিত করা হয়। তবে আবার এটা ভাববেন না যে, ডেনমার্কের সকলেই পঁচিশেই বিয়ে করে বসেন। বরং উল্টোটা। সে দেশে পুরুষদের বিয়ের বয়স গড়ে সাড়ে ৩৪। অন্য দিকে, মহিলারা গড়ে ৩২ বছর বয়সে বিয়ে করেন।
ফলে সে দেশের তিরিশের নীচের সিঙ্গলদের জীবনে স্বস্তি নেই। তবে এটাকে শাস্তি হিসাবে ভাবলে একেবারেই ভুল করবেন। বরং এই চিরাচরিত প্রথার মাধ্যমে সিঙ্গল মানুষজনদের সঙ্গে একটু দুষ্টুমি করাটাই আসল উদ্দেশ্য। সেই সঙ্গে যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া, যথেষ্ট হয়েছে, এ বার একটু থিতু হও!