International News

চিন-ভারত ‘জন্মশত্রু’ নয়: সুর নামাল বেজিংও

শুরু থেকেই চিন দাবি করছে, ডোকলাম চিনের এলাকা, সেখানে ভারতীয় বাহিনী অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছে, দ্বিতীয় ভিডিওতেও সেই কথাই বলা হয়েছে। কিন্তু ‘টক ইন্ডিয়া’ সিরিজের প্রথম ভিডিওয় যে ভাবে অত্যন্ত অসৌজন্যমূলক ভাবে ভারতকে ব্যঙ্গ করা হয়েছিল, তা এই দ্বিতীয় ভিডিওয় নেই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৭ ১৬:৫০
Share:

ভারতকে ফের সেনা প্রত্যাহারের বার্তাই দিল চিন। কিন্তু হুঁশিয়ারির সুর উধাও, এ বার সুসম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বান। —প্রতীকী ছবি।

সুর নরম করল চিনের সরকারি মিডিয়া। সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া ফের ভিডিও প্রকাশ করল ডোকলাম প্রসঙ্গে। ‘টক ইন্ডিয়া’ নামের এই দ্বিতীয় ভিডিওতেও ভারতকে ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে বলেছে বেজিং। কিন্তু চিনা মিডিয়ার এ বারের বার্তা অনেক সৌজন্যমূলক। চিন এবং ভারত, উভয়েই যে বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতাগুলির অন্যতম এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি বজায় রাখাই যে এই দুই বিশাল দেশের পক্ষে মঙ্গলজনক, সে কথাই বলা হয়েছে এ বারের ভিডিওয়। কয়েক দিন আগে প্রকাশিত ‘টক ইন্ডিয়া’ সিরিজের প্রথম ভিডিওটি কিন্তু এর থেকে অনেকটাই আলাদা ছিল। ভারতীয়দের বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষী আক্রমণ শানানো হয়েছিল সেই ভিডিওয়।

Advertisement

শুরু থেকেই চিন দাবি করছে, ডোকলাম চিনের এলাকা, সেখানে ভারতীয় বাহিনী অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছে, অতএব ভারতকেই আগে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। সংবাদ সংস্থা শিনহুয়ায় প্রকাশিত ‘টক ইন্ডিয়া’ সিরিজের দ্বিতীয় ভিডিওতেও সেই কথাই বলা হয়েছে। কিন্তু ‘টক ইন্ডিয়া’ সিরিজের প্রথম ভিডিওয় যে ভাবে চিনা অভিনেতাদের চুল-দাড়ি পরিয়ে শিখ সাজানো হয়েছিল এবং অত্যন্ত অসৌজন্যমূলক ভাবে ভারতকে ব্যঙ্গ করা হয়েছিল, তা এই দ্বিতীয় ভিডিওয় নেই।

শিনহুয়ার এই দ্বিতীয় ভিডিও প্রতিবেদনে ঝ্যাং ঝাও নামে এক অ্যাঙ্কর ডোকলামের পরিস্থিতি সম্পর্কে চিনের মত তুলে ধরেছেন, ভারতকে কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘সম্প্রীতি এবং শান্তি বজায় রেখে সহাবস্থান করা (দু’দেশের) ২৭০ কোটির যৌথ জনসংখ্যার পক্ষে ভাল। অপ্রীতিকর প্রতিদ্বন্দ্বিতা কোনও ভাবে বাড়লে বিপর্যয় হতে পারে।’’ শান্তিপূর্ণ পথেই ডোকলাম সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত বলে এই ভিডিওটির মাধ্যমে বার্তা দিতে চেয়েছে বেজিং।

Advertisement

আরও পড়ুন: ডোকলাম পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে, আশাবাদী রাজনাথ

এই প্রতিবেদনে ভারতের কিয়ৎ প্রশংসাও করেছে চিনা সংবাদ সংস্থা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিন এবং ভারত হল এমন দু’টি দেশ, যেখানে সভ্যতার পত্তন হয়েছিল প্রাগৈতিহাসিক সময়ে। এই দুই সভ্যতার মধ্যে জন্ম থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, এমন নয়। বরং দু’দেশেরই সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রয়েছে এবং দু’দেশের মানুষের মধ্যে ঐতিহাসিক ভাবে যোগাযোগও রয়েছে। সেই কারণেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার পথে ছেড়ে অবিলম্বে ডোকলাম থেকে সেনা ফিরিয়ে নেওয়া উচিত ভারতের, মন্তব্য করেছেন ঝ্যাং ঝাও। ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে প্রশংসার সময়ে ভারতীয় জীবনযাত্রা এবং বিভিন্ন বিখ্যাত ভারতীয় সৌধ ও শিল্পকলার ছবি দেখানো হয়েছে। যে বিশেষ ভারতীয় শিল্পরীতির ছাপ চিনের কোনও কোনও অংশে (বিশেষত তিব্বতে) দেখা যায়, সেই শিল্পরীতিতে তৈরি ভাস্কর্যের ছবিও দেখানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: চিনকে ঠেকাতে নজর নেপালেই

শিনহুয়ার ‘টক ইন্ডিয়া’ শীর্ষক দ্বিতীয় ভিডিওয় যে স্বরে ভারতকে বার্তা দেওয়া হল, গত আড়াই মাসে ডোকলাম প্রসঙ্গে ততটা নরম বা সৌজন্যমূলক স্বর কিন্তু চিনের গলায় শোনা যায়নি। ‘টক ইন্ডিয়া’-র যে প্রথম পর্বটি প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে ভারতীয়দের প্রবল কটাক্ষ করা হয়েছিল এবং অসৌজন্যমূলক ভাবে নকল করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক মহলে ওই ভিডিও নিন্দিত হয়েছিল এবং ‘জাতিবিদ্বেষী’ আখ্যা পেয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement