কবি মোহাম্মদ রফিক (১৯৪৩-২০২৩)। — ফাইল চিত্র।
প্রয়াত বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি মহম্মদ রফিক। রবিবার ভারতীয় সময় রাত ৯টা নাগাদ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বর্তমানে ঢাকা নিবাসী কবি রবিবার তাঁর গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের বৈটপুরে গিয়েছিলেন। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বরিশালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসায় খানিক সুস্থ বোধ করলে ঢাকার দিকে রওনা হন। পথে মাদারিপুরের কাছে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মহম্মদ রফিকের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২৩ অক্টোবর। যৌবন থেকেই বামপন্থী রাজনীতিতে বিশ্বাস এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ। স্বাধীনতার আগে আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলনে এবং মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন কবি। ষাটের দশক থেকেই কবিতা লিখতে শুরু করেন। ইংরেজি ভাষা এবং সাহিত্যের ছাত্র রফিক পরবর্তী কালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন।
১৯৭০ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বৈশাখী পূর্ণিমা’ প্রকাশিত হয়। এর পর একে একে প্রকাশ পায় ‘কীর্তিনাশা’, ‘গাওদিয়া’, ‘কপিলা’, ‘খোলা কবিতা’ ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ।
বাংলার জল-মাটি থেকে উঠে আসা তাঁর কবিতা। আজীবন সাম্যবাদে বিশ্বাসী কবি তাঁর লেখায় বার বার তুলে এনেছেন লোকায়ত জীবনকে, তার শ্বাস-প্রশ্বাসে মিশে থাকা কাহিনি-কিংবদন্তি, তার নিজস্ব সংগ্রামকে। গদ্য এবং কবিতা মিলিয়ে ৩০টিরও বেশি বই তিনি লিখে গিয়েছেন। কবিকৃতির স্বীকৃতি হিসাবে পেয়েছেন বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক প্রভৃতি সম্মান। পশ্চিমবঙ্গ থেকেও প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কবিতা সংকলন। এ পার বাংলাতেও কবির মুগ্ধ পাঠকের সংখ্যা কম নয়।
সোমবার তাঁর অন্ত্যষ্টি হবে বাগেরহাটের বৈটপুরেই। কবির ইচ্ছানুসারে তাঁকে সমাহিত করা হবে তাঁর গ্রামের মাটিতেই।