বাংলাদেশে একের পর এক সংখ্যালঘু হত্যায় অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ভারত। শুক্রবার বাংলাদেশের ঝিনাইদহে এক মন্দিরের সেবায়েতকে খুন করা হয়। এর পরেই ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি, সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সরকার যে এখনও পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে সে কথাও এক বার্তায় জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।
গত প্রায় দু’বছর ধরে বাংলাদেশে একাধিক ব্লগার, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, লেখক, প্রকাশক, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীকে হত্যা করা হয়েছে। গত মাসে ঝিনাইদহতেই এক ব্রাহ্মণকে খুন করা হয়। নাটোরে এক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষকেও হত্যা করা হয়। এর পরে রামকৃষ্ণ মিশনের এক মহারাজকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। ঝিনাইদহ এবং রামকৃষ্ণ মিশনের ক্ষেত্রে সরব হয় ভারত। ঝিনাইদহে ওই পুরোহিতের বাড়িতে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে প্রতিনিধিও পাঠানো হয়। এ দিনের বার্তায় ভারত জানিয়েছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা হয়েছে। যে ভাবে ধর্ম, আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি এবং সংখ্যালঘুর স্বাধীনতার উপর একের পর এক আক্রমণ করা হচ্ছে, তাতে উদ্বেগের কারণ রয়েছে।
সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই বার্তায়। সেখানে বলা হয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে এই ধরনের বেশ কয়েকটি অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মামলায় চার্জশিট গঠন করার কাজও শেষের দিকে। সন্ত্রাসের কাজে যুক্ত হতে পারে এমন সন্দেহে গোটা দেশ জু়ড়ে প্রায় ১১ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ধর্মীয় সংখ্যালঘু-সহ বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জীবন, ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং সম্পত্তির সুরক্ষা দেওয়া সরকারের কাজ। বাংলাদেশ সরকার নিজেদের সেই দায়িত্ব সম্পর্কে যে যথেষ্ট সচেতন, বার্তায় সে কথাও জানানো হয়েছে। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, যে কায়দায় সংখ্যালঘু হত্যা করা হচ্ছে তার সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ থাকা স্বাভাবিক।
তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, হাসিনা সরকার দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সামলাতে যে পুরোপুরি ব্যর্থ, ভারত তথা বিজেপি এবং আরএসএস-এর কাছে সে ছবিটা তুলে ধরতেই এমনটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে করা হচ্ছে। সে কারণেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে যাঁরা সরাসরি ধর্মের সঙ্গে যুক্ত তাঁদেরকেই নিকেষ করে দেওয়ার তালিকায় রাখা হচ্ছে। যদিও এর ভিন্ন মত রয়েছে। আইএস বা আল-কায়দার মতো জঙ্গি সংগঠন ইসলামের প্রভাব বাড়াতেই এমন কাজ করছে।
আরও পড়ুন