মুক্তমনা ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়ের খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। ঠিক এক সপ্তাহ আগে, গত শুক্রবার ঢাকার খিলগাঁওয়ের পূর্ব গোড়ানের ফ্ল্যাটে খুন হয়েছিলেন নীলাদ্রি। জনা চারেক দুষ্কৃতী সে দিন দুপুরে নীলাদ্রির বাড়ি ঢুকে কুপিয়ে খুন করেছিল তাঁকে।
উগ্র মৌলবাদের বিরুদ্ধে লেখার জন্য নীলাদ্রিকে খুন করা হয়েছে বলে তখনই দায় স্বীকার করেছিল ভারতীয় উপমহাদেশে আল-কায়দার শাখা গোষ্ঠী, আনসারুল্লা বাংলা টিম। এ বছর চার মুক্তমনা ব্লগার খুন হয়েছেন বাংলাদেশে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম আজ সাংবাদিকদের জানান, ধৃত দুই জঙ্গির নাম সাদ আল নাহিয়ান এবং মাসুদ রানা। দু’জনেই আনসারুল্লা বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য। গত রাতে প্রথমে উত্তরার একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় নাহিয়ানকে। তার পরে তাকে জেরা করে মিরপুরের রাস্তা থেকে ধরা হয় মাসুদকে।
পুলিশ জানাচ্ছে, নাহিয়ান শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর ভাইপো। ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে এর আগেও ধরা হয়েছিল তাকে। পরে জামিনে ছাড়া পায় সে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ-র ছাত্র যে নীলাদ্রির খুনের পিছনেও থাকতে পারে, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল পুলিশের। তাই বেশ কিছু দিন ধরেই নাহিয়ানের গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছিল। শেষমেশ কাল রাতে ধরা হয় তাকে। আজ ধৃত দু’জনকে আদালতে তোলা হলে আট দিনের পুলিশি হেফাজত দেন বিচারক।
দেশে একের পর এক মুক্তমনা ব্লগার খুন হওয়ার ঘটনায় কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশকে। ব্লগারদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ ব্যর্থ বলে রবও উঠেছিল। নীলাদ্রিও অভিযোগ করেছিলেন তিনি হুমকি পাচ্ছেন। কিন্তু পুলিশ কোনও মামলাই নিতে চাইছে না। এই পরিস্থিতিতে দিন কয়েক আগেই বিতর্ক বাড়ান বাংলাদেশ পুলিশের আই জি শাহিদুল হক। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ব্লগাররা এমন কিছু যেন না লেখেন, যাতে অন্যের ভাবাবেগে আঘাত লাগে।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও তখন হকের কথাতেই সায় দিয়েছিলেন।