মুক্তমনা অধ্যাপক খুনে জড়িত সন্দেহে রাজশাহি বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্রকে আটক করল পুলিশ। পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রের নাম হাফিজুর রহমান। গতকাল রাতে রাজশাহিরই ছোটবোনগ্রাম এলাকার একটি মেস থেকে তাকে আটক করা হয়। হাফিজুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কট্টর ইসলামি ছাত্র সংগঠন ‘ছাত্র শিবির’-এর সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত কাল শহরের শালবাগান এলাকায় নিজের বাড়ির খুব কাছেই খুন হন রাজশাহি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকি। একটি মার্কিন সংস্থা জানায়, আইএস তাদের শত্রুদের যে ভাবে মুণ্ডচ্ছেদ করে হত্যা করে, প্রায় একই ভাবে চাপাতি দিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল অধ্যাপক রেজাউলের উপর। কিন্তু আজ পুলিশ রীতিমতো জোর দিয়ে দাবি করেছে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আইএসের কোনও যোগ নেই। রাজশাহির পুলিশ কমিশনার মহম্মদ শামসুদ্দিন আজ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘এই হত্যা কাণ্ডের সঙ্গে আইএসের আদৌ যোগাযোগ নেই। এর আগেও নানা হামলার দায় আইএস নিয়েছে, কিন্তু এ দেশে আমরা আইএসের অস্তিত্বের কোনও প্রমাণ পাইনি।’’
আজ এই খুনের তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়েছে গোয়েন্দাদের শাখার পুলিশের হাতে। কাল বিকেলের দিকে নিহত অধ্যাপকের ছেলে থানায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তার পরই শুরু হয় তদন্ত। রাতে ওই মেস থেকে আটক করা হয় হাফিজুরকে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় জড়িত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
অধ্যাপক খুনে ধৃতদের কঠোর শাস্তির দাবিতে আজও উত্তাল ছিল রাজশাহি বিশ্ববিদ্যালয়। নিহত অধ্যাপক কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলেই জানিয়েছেন তাঁর সহকর্মীরা। দেশের অন্য মুক্তমনা ব্লগারদের মতো তিনি সরাসরি কট্টর ধর্মীয় মতাদর্শের বিরুদ্ধে লিখতেনও না। এখন প্রশ্ন তা হলে কেন এ ভাবে খুন হতে হল অধ্যাপক রেজাউলকে। তাঁর সহকর্মীরা জানিয়েছেন, নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতেন ওই অধ্যাপক। চরমপন্থীদের সেটাই রাগের কারণ বলে মনে করছেন তাঁরা। এই ঘটনার পরে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েক জন মুক্তমনা অধ্যাপকের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনার শামসুদ্দিন।