(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে আগেই বাদ গিয়েছে আটটি দিন। যার সিংহভাগই ছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিতে। এ বার বাংলাদেশের ১৪টি হাসপাতালের নাম বদলে ফেলল মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। এ ক্ষেত্রেও কোনওটির নামের সঙ্গে জড়িত ছিল হাসিনার প্রয়াত পিতা মুজিবর রহমানের নাম। কোনওটিতে যুক্ত ছিল স্বয়ং হাসিনার নাম। রবিবার বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে ১৪টি হাসপাতালের নাম পরিবর্তনের কথা জানানো হয়েছে।
নতুন পরিচয় পাওয়া হাসপাতালগুলির তালিকায় রয়েছে রাজধানী ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউট। এটির নতুন নাম হয়েছে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি। টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গেও হাসিনার নাম জড়িত ছিল। সেটি থেকেও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নাম বাদ দিয়ে কেবল টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ করা হয়েছে। ফরিদপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নাম থেকেও মুছে ফেলা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি। নতুন নাম হয়েছে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।
গোপালগঞ্জে হাসিনার মা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে একটি চক্ষু হাসপাতাল রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ‘কোপ’ পড়েছে সেখানেও। ওই চক্ষু হাসপাতালের নতুন নামকরণ করা হয়েছে গোপালগঞ্জ চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট। হাসিনার ভাই শেখ রাসেলের নামে রাজধানী ঢাকায় একটি হাসপাতাল ছিল। শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল। সেটির নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইন্সটিটিউট।
এ ছাড়া গোপালগঞ্জ দন্ত হাসপাতালের নামের সঙ্গে এত দিন জড়িত ছিল মুজিবের পিতা শেখ লুৎফর রহমানের নাম। সেটি এখন থেকে শুধুমাত্র গোপালগঞ্জ ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল হিসাবে পরিচিতি পাবে। মুজিবের মা শেখ সায়েরা খাতুনের নামও মুছে ফেলা হয়েছে গোপালগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ এবং গোপালগঞ্জ ট্রমা সেন্টার থেকে। তালিকায় রয়েছে মুজিবের স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছার স্মৃতিতে সিরাজগঞ্জের ২৫০ বেডের হাসপাতাল, জামালপুরের শেখ হাসিনার নাম সংযোজিত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, খুলনায় শেখ আবু নাসের স্মৃতিতে একটি হাসপাতালেও।
হাসিনার বাংলাদেশ ত্যাগের পর থেকেই বাংলাদেশের দৃশ্যত কোণঠাসা আওয়ামী লীগ। হাসিনার দলের ছাত্রশাখা ছাত্র লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। ও পার বাংলার রাজনীতিতে আপাতত হাসিনা এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগের কোনও জায়গা নেই বলেই মনে করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। সম্প্রতি এক বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূস তাঁর মতামত স্পষ্ট করেছেন। তাঁর কথায়, “স্বল্প সময়ের জন্য হলেও, হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনও জায়গা নেই।” এই আবহেই বাংলাদেশের ১৪টি হাসপাতালের নতুন পরিচয় দিয়ে সেগুলি থেকে মুছে ফেলা হল হাসিনা, মুজিব এবং তাঁদের পরিবারের বাকি সদস্যদের নাম।